৫ টি কমন সাইবার আট্যাক এবং নিজেকে সুরক্ষার উপায়

১. Password Cracking Attacks:

কমন সাইবার আট্যাকগুলোর মধ্যে প্রথম হল Password Cracking Attacks। পাসওয়ার্ড ভিত্তিক আট্যাকগুলোতে হ্যাকাররা সফটওয়্যার ব্যবহার করে এবং ব্রুট ফোর্স আট্যাক করে যাতে আপনার আপনার সুরক্ষিত একাউন্টগুলো এক্সেস নিতে পারে। হ্যাকাররা এমনসব পাসওয়ার্ড ক্রেকিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে যেগুলো ১০০০ শক্তিশালী পাসওয়ার্ডও টেস্ট করতে পারে। তাদের সফলতার কারণ হল একটি নিরাপদ পাসওয়ার্ড এর নিয়মানুসারে পাসওয়ার্ড তৈরি হয় নি। বেশিরভাগ মানুষ পাসওয়ার্ডে বড় হাতের অক্ষর এবং বিরামচিহ্ন এই নিয়ম ফলো করে। যার ফলে দেখা যায় হ্যাকার এবং তাদের সফটওয়্যার সহজে আপনার পাসওয়ার্ডটি অনুমান করতে পারে এবং সহজেই আপনার একাউন্ট ভেঙ্গে ফেলতে পারে।

যেভাবে নিরাপদ থাকবেনঃ তাই আপনার একাউন্টকে নিরাপদ রাখার সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হল পাসওয়ার্ডগুলোকে এলোমেলোভাবে তৈরি করা। আর আগে যেভাবে পাসওয়ার্ড তৈরি করতেন সেইগুলো বন্ধ করে দিন। আপনার একাউন্টকে সুরক্ষিত রাখার আরেকটি উপায় হল পাসওয়ার্ডগুলো বড় রাখা। এর ফলে হ্যাকাররা আপনার পাসওয়ার্ড এক্সেস করতে পারবে না। তাই আপনার পাসওয়ার্ডকে নিরাপদ রাখতে ভুলবেন না। আপনার বিজনেস এবং পার্সোনাল কাজে বিভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন এবং কিছু দিন পর পর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।

২. Social Engineering Attacks:

কমন সাইবার আট্যাকগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় হল Social Engineering Attacks। এই ধরনের আট্যাকহল এমন হ্যাকাররা আপনাকে ইমেইল প্রেরণ করবে যা দেখতে একটি অফিসিয়াল ইমেইল মেসেজ এর মত। এর মাধ্যমে হ্যাকাররা আশা করে, তারা যে লিংক দিয়েছে সেই লিঙ্কে ক্লিক করে আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে আপনার পাসওয়ার্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্য হাতিয়ে নিবে। ৯০ এর দশকে নাইজেরিয়ান যুবরাজের ইমেইলগুলো সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং আট্যাক এর অন্যতম উদাহরণ। এটি এমন একটি কৌশল যার মাধ্যমে হ্যাকাররা তাদের ইমেইলটি একজন প্রাপকের কাছে আসল ইমেইল হিসাবে প্রমাণ করে। যার ফলশ্রুতিতে একজন ব্যক্তির কাছে একটি লোভনীয় ইমেইল আসলে অনায়াসেই সেই ইমেইলে ক্লিক করে তার পাসওয়ার্ড এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে। এর ফলে একজন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হন।

যেভাবে নিরাপদ থাকবেনঃ সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং আট্যাক থেকে নিরাপদ থাকার সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হল ট্রেইনিং নেয়া, যে কিভাবে আট্যাক হয়। অধিকাংশ ব্যক্তি আক্রমণে শিকার হওয়ার কারণ হল তারা ফেইক ইমেইলটি চিহ্নিত করতে পারে না। তাই আপনার উচিৎ ইমেইলে অপরিচিত ইমেইল আসলে ক্লিক করার আগে চেক করা যেন আপনার একটু ভুলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অন্যের হাতে চলে না যায়।
আপনার অনলাইন বিজনেসকে নিরাপদ রাখার অন্যতম আরেকটি পদ্ধতি হল টু স্টেপ ভেরিফিকেশন ব্যবহার করা। কারণ এটি হচ্ছে একটি নিরাপদ লগইন পদ্ধতি। লগইন করতে গেলে অবশ্যই ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড লাগবে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে লগইন করার সময় আপনাকে মোবাইলে একটি মেসেজ কোড যাবে, তারপর সেই কোড ব্যবহার করে লগইন করতে হবে। এছাড়া লগইন করা যাবে না। এর ফলে হ্যাকাররা আপনার একাউন্ট এক্সেস নিতে পারবে না। এছাড়া আপনি টুল ব্যবহার করতে পারেন যেমন- ইমেইল ফিল্টার্স, এন্টি ভাইরাস এবং ফায়ার ওয়াল। এই টুলগুলো সন্দেহভাজন যে কোন বিষয়ে আপনাকে সতর্ক করবে।

৩. Social Media Attacks:

কমন সাইবার আট্যাকগুলোর মধ্যে তৃতীয় হল Social Media Attacks। আপনি অবশ্যই ফেসবুকে বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম গুলোতে এমন কিছু টিউন দেখবেন খুব আকর্ষণীয়, কিন্তু আপনি এই টিউনের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া আট্যাকের শিকার হতে পারেন। এই পোস্টগুলো হ্যাকাররা ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট বা গেম খেলতে ইনভাইট করা হয় এমনভাবে সাজায়। যদি আপনি এই রিকুয়েস্ট গ্রহন করেন তাহলে আপনার তথ্য নেয়া হ্যাকারদের জন্য আরও সহজ হয়। তাছাড়া এখন ফেসবুকে একাউন্ট করতে শুধু ইমেইল না, মোবাইল নাম্বার দিয়েও করা যায়। যার ফলশ্রুতিতে ফেক প্রোফাইল তৈরি করা খুব সহজ। আপনি দেখবেন আপনাকে কেউ ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছে আপনি তাকে চিনেন, কিন্তু বাস্তবে আপনি তাকে চিনেন না। এভাবে অনলাইনে একদল হ্যাকার রয়েছে যারা আপনার পার্সোনাল কিংবা কোম্পানির একাউন্ট হ্যাক করতে চায়।

যেভাবে নিরাপদ থাকবেনঃ সোশ্যাল মিডিয়া আট্যাক থেকে বাচার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হল কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়া আট্যাক হয় তা জানা। আপনার সোশ্যাল একাউন্টের কোন পাসওয়ার্ড কারও কাছে শেয়ার না করা। তাছাড়া একটি একাউন্ট হ্যাক হ্যাক হওয়ার লক্ষনগুলো জেনে নিন।

৪. Malware Attacks:

কমন সাইবার আট্যাকগুলোর মধ্যে চতুর্থ হল Malware Attacks। ম্যালওয়ার মানে হল ম্যালিশিয়াস সফটওয়্যার। হ্যাকাররা ভাইরাস, ঊর্মস, ট্রোজান হর্স দিয়ে ম্যালিশিয়াস সফটওয়্যার তৈরি করে একটি কোম্পানির ফাইলগুলো নস্ট বা এনক্রিপ্ট করে ফেলে। এভাবে তারা কোন কোম্পানির সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হ্যাক করে।

যেভাবে নিরাপদ থাকবেনঃ ম্যালওয়ার আক্রমণ থেকে বেঁচে থাকার সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হল প্রোটেক্ট সফটওয়্যার ব্যবহার করা। অর্থাৎ এন্টি ভাইরাস সফটওয়্যার এবং ফায়ারওয়াল ব্যবহার করা আর নিয়মিত আপডেট করা। যদি আপনি কোন এন্টি ভাইরাস সফটওয়্যার এবং অন্যান্য প্রোটেক্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার না করেন তাহলে আপনার পিসিতে প্রবেশ করা হ্যাকারদের জন্য খুবই সহজ।

৫. Eavesdropping Attack:

কমন সাইবার আট্যাকগুলোর মধ্যে পঞ্চম হল Eavesdropping Attack। Eavesdropping আট্যাকের মাধ্যমে হ্যাকাররা ডাটা আদান-প্রদানের সময় সবকিছু শুনতে পারে। যার ফলে আপনার পাসওয়ার্ড, পরিচয় এবং ক্রেডিট কার্ড নাম্বার পাওয়া খুবই সহজ। ম্যান ইন দ্যা মিডল আট্যাক থেকে Eavesdropping আট্যাক সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ ডাটা চুরি সরাসরি হ্যাকারদের কাছে চলে যায়। আর ম্যান ইন দ্যা মিডল আট্যাক থেকে Eavesdropping আট্যাক চিহ্নিত করাও অনেক কঠিন।

Eavesdropping আট্যাক ২ ধরনের হয়ে থাকে।

  • ১। Passive Eavesdropping
  • ২। Active Eavesdropping

যেভাবে নিরাপদ থাকবেনঃ Eavesdropping আট্যাক থেকে নিরাপদ থাকার সেরা পদ্ধতি হল আপনি যখন নেটে ডাটা আদান-প্রদান করবেন, তখন এনক্রিপ্ট করে নিতে হবে। তাই সব সময় ডাটা আদান-প্রদানের সময় চেক করে নিতে হবে।

-

আমার ব্লগে ভিজিট করুন

Level 0

আমি মোহাম্মাদ আলী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

হাই বন্ধুরা, আমি মোহাম্মাদ আলী। আমি একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এবং বাংলায় ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে লেখা-লেখি করি। আমি এই ব্লগের ফাউন্ডার। প্রয়োজনে ব্লগটি ঘুরে আসতে পারেনঃ Blog: https://digitalmarketingsoldier.com


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস