টাইম মেশিন: সম্ভাবনা আর আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান

(আসলে আমি ইচ্ছে করেই ধারাবাহিকতা ভাংলাম। আসলে কেউ হয়তো বলতে পারে এসব কোলাইডারের কি প্রয়োজন যেখানে সারা বিশ্বে খাদ্য সংকট। এটার কিছু সামান্য উত্তর এসব থিওরেটিক্যাল পোস্টে হয়তো পাওয়া যাবে! তবে এসব পোস্টে আমার মূল উদ্দেশ্যই হলো পাঠকেরা স্বপ্ন দেখুক তবে বাস্তবসম্মত স্বপ্ন যার বাস্তবায়ন হয়তো আমরা দেখে যেতে পারবো না, কিন্তু দেখতে পারবে আমাদের রেখে যাওয়া ভবিষ্যত প্রজন্ম!)

স্বার্থপর বলে একটা শব্দ আছে বাংলায়, আমার এক খুব কাছের মানুষ অবশ্য এ শব্দটাকে বলতো 'স্বার্থনিজ'। অবশ্য সে যখন মুখে একটা মিস্টি হাসি দিয়ে এ কথাটা বলতো তখন মনে হতো সে যা বলেছে তাই ঠিক। আশাকরি!

এইচ জি ওয়েলস 1895 সালে একটা গল্পের বই লেখেন The Time Machine.তখন কল্পকাহিনী হিসেবে এটাকে সবাই ধরে নিয়েছিলো, এবং অনেকেরই হাপিত্যেস ছিলো 'যদি এটা হতো', যেখানে আমরা তখন ব্রিটিশদের ডলা খেতেই ব্যাস্ত ছিলাম। তার কিছু দিন পর আইনস্টাইন নামের এক কেরানী ফিজিক্সে কিছুটা পরিবর্তন এনে এ যুগের পদার্থবিজ্ঞানের বাপ হয়ে গেলেন। তবে সে এটা দেখিয়ে ছিলেন আমাদের পক্ষে আলোর গতিতে চলা অসম্ভব। গবেষনা কিন্তু থেমে থাকেনি। টাইম মেশিন গবেষণার ক্ষেত্রে যেটা মূল বিষয় বস্তু সেটা হলো ঘটনা এবং তার প্রতিক্রিয়া। যদি আমরা প্রকৃতির ইউনিফাইড থিওরেমের দিকে ঝুকতে যাই এই টাইম ট্রাভেল কনসেপ্ট সেখানে আঘাত হানে, যেমন শক্তির নিত্যতা সূত্র। অবশ্য এখানে আরেকটা কথা মার খেয়ে যায়, বহু পুরোনো কথা:" প্রকৃতি শূণ্যতা পছন্দ করে না"।

টাইম মেশিন বানানো কি সোজা কথা?

এসব ভদ্র কথা কিছু কাজে মেলে না। উদাহরন দেই, টাইম ডাইলেশনের সাথে আমরা হয়তো অনেকেই পরিচিত হয়ে থাকবো। দু জমজ ভাই রাম আর সাম। সাম দেখা গেলো নাসায় চাকরি পেলো এবং কিছুদিনের মধ্যে ওকে একটা ফাটাফাটি স্পেসশীপে উঠিয়ে দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হলো কাছাকাছি কোনো নক্ষত্রে। তার স্পেসশীপ কল্পনাতীত গতিতে চলা শুরু করলো মাধ্যাকর্ষন বলের অভাবের সুযোগে, একটা ঘুরনি দিলো তারাটাকে তারপর পৃথিবীতে ফিরে আসলো যেখানে রাম বাসায় পরে পরে পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করছিলো। সামের জন্য ধরা যাক তার মোট পরিভ্রমন করতে লেগে গেছে 1 বছর কিন্তু পৃথিবীতে ইতিমধ্যে 10 বছর কেটে গেছে। সেক্ষেত্রে রাম ভাইজান তার থেকে 9 বছরের বড় ভাই হয়ে গেছে। আসলে সাম 1 বছর পর পৃথিবীতে এসে 9 বছর পরের পৃথিবী দেখছে, তারমানে সে অলরেডী ছোটখাটো একটা টাইম ট্রাভেল করে এসেছে।

কিছু বাস্তব উদাহরন: আমাদের অনুভবের বাইরে- একটু JET LEG

তবে বাস্তবে আমরা কিন্তু অহরহই এরকম পরিস্হিতির স্বীকার হচ্ছি। যদি আমরা অ্যায়ারক্রাফটের গতিতে চলি তাহলে ব্যাপারটা এত ভালোভাবে ধরতে পারি না এ জন্য যে তখন টাইম ডাইলেশনের পরিমান থাকে কয়েক ন্যানসেকেন্ডের মতো। কিন্তু এটা যদি অ্যাটোমিক ঘড়ির দ্বারা আরো নির্ভুল ভাবে মাপতে যাই তখন দেখা যাবে সময়কে গতি দ্বারা একটু টেনে ধরা হয়েছে বা সময়টা টান খেয়ে লম্বা হয়েছে একটু! তাহলে এঘটনা থেকে বোঝা যায় নিকট ভবিষ্যতে আমরা অহরহই টাইম ট্রাভেল করছি যেটা আমাদের অনুভূতির বাইরে। ইন্টারনেট ঘাটলে এরকম হাজারো পরীক্ষার কথা জানা যাবে।
সময়ের এই চ্যাপ্টা খাওয়া বা বক্র হবার গন্ডগোলটা আরেকটু যদি অবজার্ভ করতে যাই তাহলে আমরা সাবঅ্যাটমিক লেভেলে চিন্তা করি যেগুলো মূলত ঘুরানো যায় আলোর খুব কাছাকাছি গতিতেই (কোলাইডারের ব্যাপার স্যাপার সম্পর্কে অনু পরিমাণ ধরনা হয়তো আগের পোস্টে দিতে পেরেছি)। এসব কণাগুলোর মধ্যে একটা কণা হচ্ছে মিউন। বেশ স্বাতন্ত্র প্রকৃতির কণা কারন এটা মূলত বিল্ট ইন ঘড়ির মতো কাজ করে কারন এর ক্ষয়টা হয় নির্দিস্ট হাফ লাইফে (1.52 মাইক্রোসেকেন্ডস এবং এটার ক্ষয় হবার পর muon = electron + electron antineutrino + muon neutrino)। তা এই মিউন আবার কোলাইডারের ভিতর প্রচন্ড গতিপ্রাপ্ত হয় তখন আইনস্টাইনের সূত্রানূসারে এর ক্ষয় হবার হার কমে যায়। কিছু কসমিক রে এর ক্ষেত্রে সময়ের এই অসমন্জ্ঞস্যতা দেখা যায়। এই রে এর পার্টিক্যাল গুলো আলোর গতির কাছাকাছি চলে বিধায়, তাদের দৃস্টিকোণ থেকে তারা একটা গ্যালাক্সীকে কয়েক মিনিটে পার করলো, যদিও পৃথিবীর সাপেক্ষে মনে হলো যে তারা কিছু 10 হাজারেরও বেশী সময় ধরে পার করলো (এইটাও আইনস্টাইনের আর লরেন্জের কন্ট্রাকশনের সূত্রানূসারে)। যদি টাইম ডাইলেশন না থাকতো তাহলে এইসব পার্টিক্যাল কখনোই পৃথিবী ছুতে পারতো না।

আইনস্টাইনের কিছু কথা

আইনস্টাইনের রিলেটিভিটি নিয়ে আবারো একটু কথা বলি: এই সূত্রানুসারে আইনস্টাইন নামের কেরানী বলেছিলেন গ্রাভীটি সময়কে ধীর করে ফেলে। অর্থাৎ ঘড়ীটা 10 তলায় একটু দ্রূত চলে গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে (?) যেটা পৃথিবীর কেন্দ্রের একটু কাছাকাছি বলে গ্রাভীট্যাশনাল শক্তির আরেকটু কাছাকাছি। তবে এটা আপনে আমি কখনোই অনুভব করতে পারবো না, পারবে কোনো অ্যাটমিক বা সিসমিক ঘড়ি (দুঃখের বিষয় হলো আমি কখনোই এসব ঘড়ি দেখি নাই, ইদানিং মোবাইলের কারনে আমি ঘড়িও পড়ি না)। তবে একটা জিনিস আমরা বুঝতে পারি যারা জিপিএস অহরহ ব্যবহার করেন। যদি তাই বা না হতো নাবিকেরা, ক্রুজ মিসাইল আরো কয়েক মাইল দূরে গিয়ে পৌছুতো নির্দিস্ট জায়গা থেকে।
আরেকটা জটিল উদাহরন দেই: নিউট্রন তারা ঘনত্ব সম্পর্কে ধরা যাক সবারই আইডিয়া আছে এবং এর গ্রাভীটি সম্পর্কেও সেক্ষেত্রে জানার কথা(এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো যাবে অন্য কোনো পোস্টে যদি বা কোনো কৌতুহল থাকে)। হিসাবে দেখা যায়, সময় ওখানে 30% শতাংশ ধীর পৃথিবীর সময় থেকে। যদি ঐ তারা থেকে কেউ যদি টেলিস্কোপ দিয়ে পৃথিবীতে উকি মারে তাহলে দেখা যাবে সবাই ভিডিও ক্যাসেটের ফাস্ট ফরওয়ার্ডের মতো দৌড়াচ্ছে। ব্লাক হোলও সেরকম একটা জিনিস যদি সিঙ্গুলারিটিতে কেউ পড়তে পারে তাহলে তার জন্য একটা আদর্শ টাইম ডাইলেশন সম্পর্কে ক্লীয়ার ধারনা পেতে পারে।

অন্যান্যদের মনের কথা: অতীত যাওয়াও সম্ভব!

1948 সালে কার্ট গোডেল আইনস্টাইনের গ্রাভিটেশনাল ইকোয়েশন সমাধান করে দেখালেন যে আসলে এটা একটা ঘুর্নায়মান মহাবিশ্বকে রিপ্রেজেন্ট করছে (যদিও এটা সে কিভাবে বোঝালো সেটা আমার পক্ষে বের করা সম্ভব হয়নি, তবে এটা নির্ভুল হলে একটা দারুন খোজ ছিল)। এই তত্ব অনুসারে একজন নভোচারী পরিভ্রমন করে তার অতীতে ফিরে যেতে পারবে। এটা এজন্য যে গ্রাভীটি যেভাবে আলোর গতিকে প্রভাবিত করবে। তবে এই সলিউশনের অনেক ভেজাল ছিলো, প্রথমত এই তত্ব অনুসারে তাহলেতো বিগ ব্যাং আর সিঙ্গুলারিটি মার খেয়ে যায়।
আরেকটা সিনারিও পাওয়া যায় যেটা 1974 সালে তুলান ইউনিভার্সিটির ফ্রান্ক টিপলার অন্ক কষে বের করেন যে একটা ঢাউস সাইজের অসীম দৈর্ঘের সিলিন্ডার আলোর গতিতে ঘুরছে তার নিজস্ব অক্ষে এবং সে ক্ষেত্রে একজন নভোচারী তার অতীতে ফিরে যেতে পারে এর মাধ্যমে কারন সেই একই ঘটনা: এখানে আলোকে টেনে পেচিয়ে একটা বদ্ধ লুপের মধ্যে এনে ফেলেছে। আবারো 1991 সালে রিচার্ড গট নামের একজন ভবিষ্যৎবানী করেন যে কসমিক স্ট্রিং একই ফলাফলের জন্ম দিতে পারে (কসমোলজিস্টরা সন্দেহ করেন যে এটার গঠিত হয়েছিলো বিগ ব্যাংর এর প্রাথমিক পর্যায়ে)। কিন্তু আশির দশকের মাঝামাঝি ওয়ার্মহোলের কনসেপ্ট নতুন মাত্রা আনে।

ওয়ার্মহোল একটা হাইপো যার আরেক নাম স্টারগেট এবং এটা হচ্ছে দীর্ঘতম দূরত্বে অবস্হিত দুইটা বিন্দুর মধ্যবর্তি একটা শটকাট রাস্তা। কেউ যদি ওয়ার্মহোল দিয়ে একটা লাফ দেয় তাহলে সে হয়তো নিজেকে মহাবিশ্বের অন্য প্রান্তে খুঁজে পেতে পারে। ওয়ার্মহোল জেনারেল থিওরী অফ রিলেটিভিটিতে খাপ খায় যেখানে গ্রাভীটি শুধু সময়কে নয় স্হান কেও লন্ডভন্ড বা মুচড়ে ফেলতে পারে। এই থিওরী একটা অল্টারনেটিভ রাস্তা এবং টানেলের ধারনা দেয় যেটা মূলত স্হানের ঐ দুই বিন্দুর সংযোগ হিসেবে কাজ করে। একটা ওয়ার্মহোল হতে পারে আসল রাস্তার চেয়ে কম দূরত্বের হতে পারে!
এখন ধরে নেয়া যাক ওয়ার্মহোলের ভিতর দিয়ে পরিভ্রমন করা যায় (এখানে একটা মেইন ব্যাপার হলো যদি আমি ঘুরতে যাই, হয়তো আমি টেনে এমন লম্বা হবো যে আমার 5.8 ফুটি দেহ 30 ফুটি হয়ে যাব আর আমার প্রাণ বায়ুর যে কি হবে সেটা বুঝতে পারছি না কারন ঐ সময় আমার কোনো গ্রোথ বা অনুভূতিও থাকবে না), এর মধ্যে অবশ্য থর্নের ইক্সোটিক ম্যাটারের অস্তিত্ব থাকতে থাকবে। কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স অনুসারে অ্যাক্সোটিক ম্যাটার নেগেটিভ ভর সম্পন্ন এবং গ্রাভীটিতে এটা আকর্ষনের পরিবর্তে বিকর্ষিত হয়। আর একটা ওয়ার্মহোলের স্ট্যাবিলিটির জন্য এটার উপস্হিতি প্রয়োজন কেননা এটার মাধ্যমে একটা অ্যান্টিগ্রাভীটি ফোর্স কাজ করবে এবং বিস্ফোরন রোধ করবে যেটা তখন একে ব্লাক হোলে পরিণত করবে। এই অ্যাক্সোটিক ম্যাটার আমাদের চেনা জানা ফিজিক্সের দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না (এজন্যই এটা হাইপো!) তবে এই নেগেটিভ অ্যানর্জি স্টেটের অস্তিত্ব কিছু নির্দিস্ট কোয়ান্টাম সিস্টেমেই থাকে তবে এটা এখনো অপরিস্কার যে কি পরিমান অ্যান্টিগ্রাভিটি কণার প্রয়োজন একটা ওয়ার্মহোলকে স্ট্যাবিলাইজ করতে!
তবে থর্ন আর তার কলিগরা পরে বুঝতে পারেন যে যদি একটা স্ট্যাবল ওয়ার্মহোল যদি তৈরী করা যায়, তাহলে এটা একটা টাইম মেশিন হিসেবে কাজ করতে পারে।

স্ট্যাবিলাইজড ওয়ার্মহোল: টাইম মেশিনের দ্বারপ্রান্তে

তাহলে একটা ওয়ার্মহোল যদি আমরা পেতে চাই, তাহলে এর একটা মুখ একটা নিউট্রন তারার দিকে টানা থাকবে এবং অবস্হানটা থাকবে এর সারফেস এর দিকে। তারা মাধ্যাকর্ষন ঐ স্হানের সময়কে ধীর করে ফেলবে যাতে করে ওয়ার্মহোলের দু মুখের মধ্যে একটা সময়ের ব্যাবধান আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। যদি দুটো মুখই জায়গা মতো রাখা হয়, এই সময়ের ব্যাবধানটাই ওখানে আটকে থাকবে!
ধরা যাক ঐ সময়ের ব্যাবধান 10 বছর। একজন নভোচারী ঐ ওয়ার্মহোলের মধ্য দিয়ে এক দিকে লাফ দিলো যেটা মূলত 10 বছর পরের ভবিষ্যত আবার আরেক নভোচারী যদি আরেক দিক দিয়ে লাফ দেয় তাহলে পৌছে যাবে 10 বছর পিছনে। তাহলে দেখা যাচ্ছে স্হানাংকের একটা ক্লোজ লুপ একই ভাবে একটা সময়াংকের লুপে পরিণত হতে পারে। শুধু একটা রেস্ট্রিকশন তখন থাকবে যখন ওয়ার্মহোল প্রথম তৈরী করা হয়েছিলো সে সময়ে ঐ নভোচারী কখনোই ফিরত পারবেনা।
অন্যভাবে বলা যায়, ওয়ার্মহোল প্রাকৃতিক ভাবে তৈরী হতে পারে খুবই ক্ষুদ্র স্কেলে, যেমন প্লান্ক লেন্হে যার তুলনা হতে পারে একটা আনবিক নিউক্লিয়াসের। তত্ব অনুসারে, এরকম এক মিনিটের ওয়ার্মহোল অ্যানর্জি পালসের দ্বারা স্ট্যাবল হয় অতঃপর কোনোভাবে সাধারন মাত্রায় বিরাজ করে!

প্যারাডক্স

এখন কিছু প্যারাডক্সের কথা বলা যাক, যেটা মূলত সবচেয়ে বর প্রশ্ন এইসব টাইম মেশিন থিওরেটিস্টদের কাছে!ধরা যাক এসব ইন্জ্ঞনিয়ারিং প্রবলেম মেটানোর পর আমরা একটা টাইম মেশিন বানাতে সক্ষম হলাম, তাহলে দেখা গেলো এক বদ লোক অতীতে গিয়ে তার মেয়েকে ছোটবেলাতেই খুন করলো, সেক্ষেত্রে কি হবে?
এরকম অনেক ধাধা বা প্রশ্ন সামনে আসবে যখন কেউ হয়তো অতীত পরিবর্তন করতে চাইবে তবে হ্যা এটা যদি এমন হয় একজন অতীতে গিয়ে একটা মেয়েকে বাচালো আর ভবিষ্যতে সে তার মা হলো তখন এটা একটা কারনঘটিত পজিটিভ লুপ হবে যেটার সামন্জ্ঞস্যতা বিদ্যমান। হয়তো কোনো টাইম ট্রাভেলারের আচরনগত ক্ষমতাকে রেস্ট্রিক্ট করা যেটে পারে এসব কারনগত সামন্জ্ঞস্য দিয়ে, কিন্তু এটা আসলেই সম্ভব হবেনা টাইম ট্রাভেলারের ফ্রিকোয়েন্সি কন্ট্রোক করা।
আবার এমনও হতে পারে যে ধরা যাক, একজন টাইম ট্রাভেলার এক বছর আগে গিয়ে কোনো ফাটাফাটি থিওরেম IEEE থেকে ডিটেলসে পড়ে আবার অতীতে গিয়ে সেটা সে তার ছাত্রদের ভালো পড়িয়ে ফেললো যেটা পড়ে আবারো IEEE তে লেখা হলো। তাহলে দুটো লেখা দু সময়ে।
এই সব টাইম ট্রাভেলের অদ্ভুত ঘটনা এখনো একে সম্ভাবনার খাতায় ফেলে রেখেছে। তবে স্টিফেন হকিং "ক্রোনোলজি প্রোটেকশন কনজেকচার" এর ধারনা দেন যেটা এই কারনগত লুপ গুলোকে বাদ দিয়ে ফেলে। অবশ্য পেনরোজের এরকম একটা কনজেকচার আছে। যাই হোউক রেলিটেভিটির ল কারনগত লুপকে সমর্থন করে, এবং এই ক্রোনোলজি কনজেকচারের মাধ্যমে কিছু ফেক্টরের প্রয়োজন পরে যেগুলো টাইম ট্রাভেলারের অতীত ভ্রমনের বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে পারে। তাহলে এই ফ্যাক্টরগুলো কি? একটা সাজেশন হলো কোয়ান্টাম প্রক্রিয়া সেক্ষেত্রে এগিয়ে আসবে। টাইম মেশিনের অস্তিত্ব কনাগুলোকে তাদের লুপ থেকে অতীতে ভ্রমন করার পারমিশন দেবে। কিছু ক্যালকুলেশনে অবশ্য এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে আগের ঘটে যাওয়া অঘটনসমূহ নিজে থেকেই জোরেশোরে উঠে এসে শক্তির বিশাল এক সার্জের সৃস্টি করে ওয়ার্মহোলকে ভেঙ্গে ফেলবে!

এই ক্রোনোলজিক্যাল প্রোটেকশন এখনো ধারনাগত পর্যায়ে, তাই টাইম ট্রাভেল নিয়ে এখনো আশার আলো আছে। হয়তো অপেক্ষা করতে হবে সেই ক্ষনের জন্য যখন কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স সক্ষম হবে গ্রাভিটেশনাল হাইপোথিসিস গুলোর সাথে হয়তোবা এমন একটা থিওরীর মাধ্যমে যার মাধ্যমে সমন্বয় ঘটবে স্ট্রিং থিওরি বা তার এক্সটেনশনের জন্য, তৈরি করবে তথাকথিত M-থিওরী (মেমব্রেন থিওরী)। এটা এমনও হতে নেক্সট জেনারশনের কোলাইডারগুলো এরকম ছোটখাটো সাব অ্যাটোমিক ওয়ার্মহোলের সৃস্টি করতে পারবে যেটা হয়তো এইচজি ওয়েলসের টাইম মেশিনের কাছে শিশু মাত্র!। কিন্তু এটা অবশ্যই পদার্থবিদ্যায় এক অনবদ্য পরিবর্তন আনবে!

Level 0

আমি অশ্রুগুলো রিনকে দেয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 18 টি টিউন ও 104 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

ছেলেটি পথে নেমেছিলো একদিন নীল মায়ার হাতছানিতে। নিঃসঙ্গতায় হেটে যেতে আবিস্কার করে নিঃশব্দ চাদ তার একান্ত সঙ্গী। এখন সে হাতড়ে বেড়ায় পুরোনো সুখস্মৃতি, ঘোলা চোখে খুজে ফেরে একটি হাসি মুখ!


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

জানতাম না তো । আমি অধীর আগ্রেহ নিয়ে আছি টাইম মেশিন নিয়ে ।

Level 0

কঠিন একটা লেখা। জোস পড়ে ভাল লাগল।

আচ্ছা আলোর গতিতে চলা কি একবারেই অসম্ভব?

আমার কথা রাখলেন শেষ পর্যন্ত। ধন্যবাদ। গ্রেইট।।

@প্রযুক্তিবিদ, সুন্দর একটা প্রশ্ন রেখেছেন। তার আগে অসীম আর শূন্য জিনিসটার সংজ্ঞাটা একটু জেনে নেই। এককালে মনে করতাম শূন্য জিনিসটা আসলেই শূন্য, অন্তত যারা পিওর ম্যাথ নিয়ে কাজ করেন। এ ধারনা অনেক দিন ধরে চলে আসছিলো আর এর ধারনার প্রভাব পদার্থবিজ্ঞানে বেশ প্রবল ভাবে পড়েছিলো। একই কেস অসীমের ক্ষেত্রেও। কিন্তু এই গোয়ার্তুমি টাইপ সংজ্ঞাকেও পাশ কাটানো গেছে। যেমন শূন্য বা এ্যাবসলিউট জেরো বলতে সে অবস্হাকেই বোঝাই যেখানে সম পরিমান আর ভর বিশিস্ট ম্যাটার আর এ্যান্টিম্যাটার বিদ্যমান। আবার অসীমের ক্ষেত্রে একটু ভিন্নতার আশ্রয় নেয়া যায়, পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় মহাবিশ্বকে আমরা এখন অসীম বলি এই জন্য যে এর মাত্রার দৈর্ঘ্যকে প্রকাশ করার অক্ষমতা।
রিলেটিভিটি এর ল অনুসারে দেখা যায় যখন বস্তুর বেগ v>c হয় তাহলে দেখা যাচ্ছে এর ভর একটা ইমাজিনারি সংখ্যায় রূপ নেয়, যেটা বাস্তবে অসম্ভব! এটা এজন্য যে আইনস্টাইনের দুনিয়ায় আলোর গতিকেই পরম বলে ধরে নেয়া হয়েছে (চেরনকভ রেডিয়েশন যদি বাদ দেয়া যায়)।তবে v=c হলে তখন একটা রেজাল্ট পাওয়া যাচ্ছে। আমি অবশ্য একবার 2002 বা 2003 এর দিকে পেপারে একটা পরীক্ষার কথা পড়েছিলাম শক্তিশালী ম্যাগনেটিক ফিল্ডে পরম তাপামাত্রার কাছাকাছি নিয়ে উচ্চচাপে হিলিয়ামের কয়েকটা অনুকে চালনা করে দেখা গিয়েছিলো তারা আলোর গতির কিছু উপরে বেগ প্রাপ্ত হয়, যদিও ওটা আর আমি খুজে পাইনি কোথাও। তবে এখন এটাও শুনি যে ফোটনের ক্ষেত্রে টেলিপোর্টেশনে কিছুটা সাফল্য পাওয়া গেছে। যদি এগুলো সম্ভব হয়ে থাকে তাহলে আলোর গতির চেয়েও দ্রুতগতিতে চলা সম্ভব তবে তা আইনস্টাইনের রিলেটিভিটির সুত্রানুসারে নয়।
সেক্ষেত্রে আমাদেরকে অবশ্যই ভরকে বাস্তবসম্মতভআকারে সংজ্ঞায়িত করতে হবে কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স দিয়ে!

Level 0

Realy, it’s very nice site!!! I expect more & more, good and informationable article.
Thanks to all.

লেখাটা পড়ে ভালো লাগল। কিছু সংযোজন/সংশোধনঃ

—– যিনি আইন্সটাইনের ক্ষেত্র সমীকরনের সমাধান করেছিলেন, তার নাম কার্ট গোবেল নয়, কার্ট গোডেল।
—— যতদূর জানি, সালটা ছিল ১৯৪৯।
—– গোডেল এর সমাধান গোডেল মেট্রিক নামে সমধিক খ্যাত।

ধন্যবাদ @তারেক আজিজ ভাই, ওটা ঠিক করে দেয়া হলো। তবে এখানে একটু সংযোজন করতে চাই, গোল্ডেন ম্যাট্রিক অনুসারে এই মহাবিশ্বের আকৃতি অনেকটা ডিম্বের মতো হয়ে যায় বিধায় এখানে বাউন্ডারী ইকোয়েশনে যে কেন্দ্রিভূত শক্তির জন্য বিদ্যমান ভেরিয়েবল পুরোপুরি অসামন্জ্ঞস্য মনে হয়। তখন এতে করে দেখা যায় মহাশূন্যতার সংজ্ঞা এবং শক্তির ভারসাম্যকে কন্ট্রাডিক্টে ফেলে দেয়। এছাড়া তার সমাধান অনুসারে মহাবিশ্বে বিগ ক্রান্চ্ঞ অবশ্যম্ভাবী।

তাই কিছু দিন পরই তার সমাধানটা অনেকটা অবহেলিত হয়ে যায়, তবে তার এই সমাধানের কারনেই পরবর্তীতে এর উপর আরো অনেক গবেষনা যুক্তি তর্ক শুরু হয় যার খানিকটা ব্যাখ্যা পেনরোজ ডায়াগ্রাম আর হকিং দিয়েছেন!

Level 0

আমার মনে হয় টাইম মেশিন বানানো কোন দিনই সম্ভব হবে না। কারণ টাইম মেশিন মূল থিওরি হচ্ছে অতীতে যাওয়া বা ভবিষ্যতে যাওয়ার একটি যন্ত্র। তাই যদি হয় তাহলে ত আমাদের এই বিশ্ব প্রতি মূহূর্তে একটি করে কপি হচ্ছে। হয়ত আমরা কোন কপি। আমার আমাদেরও অনেক কপি হয়ে যাচ্ছে। কপি থেকে কপি, কপি থেকে কপি হচ্ছেই
(আমার মাথা ধরে না, যদিও আমার বিশ্বাস যে, হয়তঃ বা একসময় টাইম মেশিন আবিষ্কার হবে, তখন আমার এই কপি’র ধারনাটি পাল্টে যাবে।)

বাবু ভাই, সুন্দর মন্তব্য করেছেন। টাইমে মেশিন নিয়ে কথা বলতে গেলেই আপনার মতো এরকম প্রশ্নের সম্মুখীন মাঝে মাঝেই মুখোমুখি হতে হয়। আপনার উত্তরটা দিচ্ছি দুভাবে। পারলে সমীকরন দিয়ে দেখাতাম তবে কমেন্টে সমীকরণ দেবার সিস্টেম জানি না।

প্রথমে আমি যদি ভবিষ্যতে যেতে চাই: আপেক্ষিকতার সূত্রানুসারে বস্তুর গতিবেগ যদি আলোর কাছাকাছি যায় তাহলে আপনি অবজার্ভারের অপেক্ষা অতি দ্রুত সময়ে স্হানের দূরত্ব অতিক্রম করছে। যদিও এটা সম্ভব না এখনও তবে এর কাছাকাছি কাজটা আমরা নিয়মিতই করছি যেটাকে আমরা জেটলেগ বলেই জানি। আপনি পশ্চিম থেক পূর্বে অতিক্রম করলেন জেটবিমানে তখন আপনার অতিক্রান্ত দূরত্বের টাইম ডাইলেশন হিসাব করলে আপনি অলরেডী টাইম ট্রাভেল করে ফেলেছেন। সেক্ষেত্রে আপনার জন্য কোনো কিছুর কপি পেস্টের প্রয়োজন পড়ছে না। তবে এটা আপনার আমার অনুভবের বাইরে তবে এ্যাটোমিক ঘড়ি এটা অনুভব করতে পারবে!

যদি আপনি অতীতে ফিরে যেতে চান: এক্ষেত্রে আমার একটা লেখা হলো লার্জ হেড্রন কোলাইডার: টাইম মেশিনের কারখানা বলা যায় কি না? এই পোস্ট টা পড়লে আপনার ধারনা কিছুটা ক্লিয়ার হবে। হয়তোবা মাইক্রো বা সাবএ্যাটোমিক লেভেলের ওয়ার্মহোল বানানোর সময়টা খুব কাছেই হয়তো যদি বা প্লান্কের সকল মান ঠিক রেখে এক্সপেরিমেন্টটা ফুল ফ্লেজে চালানো যায়।

তার পরও আমার টাইমমেশিন ব্যাপার টা বিশ্বাস হয়না। যদিও এবিষয় আপনার মত আমার বিশদ ধারনা নেই তারপর ও আমার অতিতে যেটা ঘটে গেছে সেখানে আমি কিভাবে ফেরত যেতে পারি!!! আর অতিতে গিয়ে কি আমি আমার মূল কপিকেই দেখবো!!! মানে আমি ক্লোন হয়ে গেলাম।

আর কোন দূরত্বে আলোর গতিতে অতিক্রম করা মানেই তো আর আমি ভবিষ্যতে পৌছে গেলাম ।

আমি কলেজে যাই বাসে করে এখন বাসে না গিয়ে আমি সুপার সনিক প্লেনে গেলাম দেখাগেল আমি বাসে গেলে স্কুলে পৌছাতে যত সময় লাগতো সুপারসনিক প্লেনে গেলে তার চেয়ে অনেক কম সময় যেতে পারি । এখানে আমি কোন জানে চড়ে দ্রুত গতিতে যাচ্ছি কিন্তু সময় কিন্তু সময়ের গতিতেই চলছে । আমি শুধু দ্রুত গতিতে অন্য স্থানে পৌচ্ছাচ্ছি

আমার ঋত্তরটা পেলে ভালো লাগলো আচ্ছা সাইন্সল্যাবের কাছাকাছি যে বিজ্ঞানমেলা হচ্ছে স্কুলের ছাত্রছাতীদের নিয়ে সেটির উপর একটি প্রতিবেদন টেকটিউনসে দেয়া হলে খুব ভালো হত এইসব ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের আবিস্কার সম্পর্কে সবাই জানতে পারতো

এক কথায় অসাধারন একটা লেখা। আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ এ ধরনের একটা টিউন উপহার দেবার জন্য।

    @ডিজিটাল উন্মাদ: সহমত টিউনারের সবগুরো লেখাই অসাধারন।

লেখাটি পড়ে অসম্ভব ভাল লাগল। ধন্যবাদ এরকম তথ্যবহুল টিউন এর জন্য।