প্রসেসর র‍্যাম অপটিকাল ড্রাইভ এর টিপস ও রিভিউ (নতুন দের জন্য)

আসালামুয়ালাইকুম প্রিয় টেক  টিউনার বাসীরা। আশা করি মহান আল্লাহের রহমতে ভালই আছেন। হঠাৎ করে মনে হল যে আমরা কম্পিউটার সম্পর্কে মোটামুটি জানলেও নতুন অনেকেরই কম্পিউটার এর হার্ডওয়্যার সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা নেই। তাই আপনাদের জন্য আজকে আমার ছোট এই প্রয়াস।

আমি আবারও বলছি যে আমি টেক টিউনা এ নতুন। এই জাতিয় পোস্ট হয়তবা কেও আগেও করতে পারে। তবে আমি চেষ্টা করবো আপনাদের কম্পিউটারের প্রতিটি হার্ডওয়্যার সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারনা দিতে যা আপনার কাজে আসবে।

একটি কম্পিউটার মূলত নিম্নোক্ত হার্ডওয়্যার দ্বারা গঠিত হয়,

১*  প্রসেসর
২*  মাদারবোর্ড
৩*  র্যাম (RAM)
৪*  হার্ডডিস্ক
৫*  অপটিকাল ড্রাইভ
৬*  গ্রাফিক্স কার্ড
৭*  মনিটর
৮*  পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট
৯*   ক্যাসিং
১০* মাউস/কি-বোর্ড

আর আমি প্রসেসর ,র‍্যাম ও opticall dics drive

ধাপে ধাপে সবগুলো নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো।
AMD Phenom II Dragon কম্পিউটার সমাচার, ( প্রসেসসর ) পর্ব ১

*** প্রসেসসর***

মূলত প্রসেসর হচ্ছে কম্পিউটার এর প্রান, এর মূল চালিকাশক্তি। প্রসেসর মূলত দুইটি কোম্পানি তৈরি করে। ইন্টেল ও এএমডি। আমাদের দেশে মূলত ইন্টেল সবচে বেশি ব্যাবহার হয়। তবে ইউরোপে এএমডির বাজার বেশি। এই দুটি ছাড়াও Apple, NVidia, IBM কোম্পানি প্রসেসর তৈরি করে তবে তা তাদের ট্যাবলেট পিসির জন্য।

Processor wallpaper কম্পিউটার সমাচার, ( প্রসেসসর ) পর্ব ১

+ক্লক স্পিড+ :-

- সিপিউ প্রতি সেকেন্ডে কতগুলো ক্যালকুলেশন করতে পারে তা মাপার জন্য ক্লক স্পিড ব্যাবহার করা হয়। তাই ত ক্লক স্পিড যত বেশি হবে, প্রসেসর এর কাজ করার ক্ষমতা তত বেশি হবে। প্রসেসর এর ক্লক স্পিড গিগাহার্টজ এককে মাপা হয়।

+ইন্টারফেস+ :-

প্রসেসরকে মাদারবোর্ডের সাথে যুক্ত করার সিস্টেম কে ইন্টারফেস বলে। প্রসেসরকে মাদারবোর্ডের সাথে সকেটের দ্বারা যুক্ত করা হয়। আর এক এক প্রসেসর এর জন্য এক এক রকম সকেট। যেমন ইন্টেল এর সকেট গুলা হচ্ছে LGA775 যা ইন্টেল Pentium 2, 3, 4, Dual Core, Core 2 Duo, Core 2 Quad, Core 2 Extreme প্রসেসর এর জন্য। LGA1156 হচ্ছে Core i3, i5, i7 এর জন্য।  2nd Generation Intel Core i3, i5, i7 LGA1155 সকেট সাপোর্ট করে। Core i7 এর জন্য LGA1366 নামে আলাদা আরও একটি সকেট আছে।
এএমডি এর জন্য Sempron, Athlon, Athlon64, Phenom এর জন্য AM2 ও Athlon 2, Phenom  2 এর জন্য AM3 সকেট ব্যাবহার করা হয়। আপকামিং BULLDOZER এর জন্য AM3+ সকেট ব্যাবহার করা হবে। বর্তমানে BULLDOZER হচ্ছে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী

প্রসেসর।

+কোর+ :-

বর্তমানে কেও সিঙ্গেল কোর এর পিসি কিনতে চান না। মাল্টিকোরে প্রসেসর এর কাজের গতি বেশি থাকে এবং কাজগুলো সুষমভাবে সম্পন্ন হয়। যে প্রসেসররে কোর যত বেশি তার কাজের গতি তত বেশি।
Intel Core i7 Extreme Logo কম্পিউটার সমাচার, ( প্রসেসসর ) পর্ব ১

+ফ্রন্ট সাইড স্পীড+ :-

এফএসবি দ্বারা সিপিউ ও মাদারবোর্ডের চিপসেট ও কম্পোনেন্ট এর যোগাযোগের গতির হার কে বুঝানো হয়। এফএসবি যত বেশি হবে, সিপিউ তত তাড়াতাড়ি মাদারবোর্ড ও অন্যান্য যন্ত্রের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। তাই বেশি বাস যুক্ত প্রসেসর এর ক্ষমতা বেশি। বাস স্পিড কে মেগাহার্টজ এককে মাপা হয়।

+ক্যাশ মেমোরি+ :-

প্রসেসররের সাথে থাকা মেমোরি কে ক্যাশ মেমরি বলে। প্রসেসর যখন কাজ করে তখন ডাটা এই মেমোরি তে সংরক্ষিত থাকে। তাই ক্যাশ মেমরি যত বেশি হবে, প্রসেসর তত দ্রুত কাজ করবে। ক্যাশ মেমরি প্রধানত ৩ রকম। L1, L2, L3.
L1 আকারে ছোট কিন্তু খুব দ্রুত কাজ করে।
L2 মাঝারি আকারের এবং মোটামুটি দ্রুত কাজ করে।
L3 খুব বড় আকারের কিন্তু দ্রুত কাজ করতে পারে না। ইদানীং L4 নামে নতুন একটি মেমোরি বের হয়েছে। ল্যাপটপে L3 মেমোরি ব্যাবহার হয়। প্রসেসররের প্যাকেট/বিবরনিতে ক্যাশ মেমরির নাম ও পরিমান দেয়া থাকে।

+হাইপার থ্রেডিং+ :-

হাইপার থ্রেডিং হচ্ছে ইন্টেল এর একটি যুগান্তকারী আবিস্কার যা সিঙ্গেল কোর কে দুই কোরের সমান কাজ করার ক্ষমতা দান করে। এএমডির প্রসেসর এ এর নাম হাইপার ট্রান্সপোর্ট। এই প্রযুক্তির কারনে একসাথে অনেকগুলো কাজ করলেও সিস্টেম এর গতি ধীর হয় না।  হাইপার থ্রেডিং/ট্রান্সপোর্ট সমর্থনকারী প্রসেসর এর ক্ষমতা সাধারন থেকে ভাল হয়।

+++কিছু লক্ষণীয় বিষয়+++

বেশি ক্লক স্পিড ও কম ক্যাশ যুক্ত প্রসেসর থেকে কম ক্লক স্পিড ও বেশি ক্যাশ যুক্ত প্রসেসর বেশি ভাল কাজ করতে পারে। গেমিং প্রসেসররে ওভারক্লক করতে হতে পারে। তাই ব্লাক এডিশন প্রসেসর গুলো ভাল কাজ করতে পারে।

*** RAM ***

যা দ্বারা Random Access Memory কে নির্দেশ করা হয় অথবা আপনি একে RAM এর পূর্ণরুপ বলতে পারেন। একে আমরা অস্থায়ী স্মৃতি বলতে পারি। কেননা অপারেটিং সিস্টেম চলার সময় RAM বেশকিছু প্রোগ্রাম সংরক্ষণ করে যা অপারেটিং সিস্টেম কে চলতে সাহায্য করে। কিন্তু কমপিউটার বন্ধ করে দিলে বা RAM এ বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে RAM এ থাকা সকল তথ্য মুছে যায়। তাই তো একে অস্থায়ী স্মৃতি বা ভোলাটাইল মেমোরি বলা হয়। তাহলে তো বুঝতেই পারলেন, RAM যত বেশি হবে, সিস্টেম তত গতিশীল হবে।

আমাদের বাজারে মূলত ২ ধরনের RAM পাওয়া যায়

১* SD (Synchronous Dynamic)
২* DDR (Double Data Rate)

এদের মধ্যে DDR (Double Data Rate) সবচেয়ে ভাল। DDR1, DDR2, DDR3 RAM বাজারে পাওয়া যায়। DDR3 RAM এর কাজের গতি সবচেয়ে বেশি। নিচের দিকে খেয়াল করুন

Memory                                             Bus Speed                                      Module

DDR2-400                                          200MHz                                         PC2-3200
DDR2-533                                          266MHz                                         PC2-4200
DDR2-667                                          333MHz                                         PC2-5300
DDR2-800                                          400MHz                                         PC2-6400
DDR2-1066                                        533MHz                                         PC2-8500

162786 090929162430 4GaXeRam web কম্পিউটার সমাচার, ( RAM ) পর্ব ২

DDR3-800                                          400MHz                                         PC3-6400
DDR3-1066                                        533MHz                                         PC3-8500
DDR3-1333                                        667MHz                                         PC3-10600
DDR3-1600                                        800MHz                                         PC3-12800
DDR3-1866                                        933MHz                                         PC3-14900
DDR3-2133                                       1066MHz                                        PC3-17000

এইবার আমি আর একটু ভেঙ্গে বলি। আপনি যে কোন RAM এর Module দেখে RAM এর সবকিছু বুঝতে পারবেন। যেমন PC3 নির্দেশ করে যে এটি একটি DDR3 Memory এর RAM। আর 8500 নির্দেশ করে যে এর ব্যান্ডউইথ হচ্ছে 8.5GB/Sec. প্রতিটি RAM এর প্যাকেট এ এই Module নাম্বার দেয়া থাকে।

+++ কিছু কথা +++

আপনি আপনার মাদারবোর্ডে যতটুকু Bus Speed এর RAM সাপোর্ট করে, আপনি ততটুকু Bus Speed এর RAM কিনুন। কারন আপনি যদি তার থেকে বেশি Bus Speed এর RAM কিনেন তাহলে তা সম্পূর্ণ কাজ করবে না। একটা উদাহারন দিয়ে সহজ করে দেই। আপনার মাদারবোর্ড যদি DDR3-1066 Bus Speed এর RAM সাপোর্ট করে, কিন্তু আপনি যদি DDR3-1333 Bus Speed এর RAM কিনেন তাহলে তা কাজ করবে DDR3-1066 Bus Speed এ। ফলাফল কি হল। টাকা খরচ হল কিন্তু সেই অনুপাতে Performance পেলেন না। তবে চিন্তা করার কিছু নাই। আজকাল ইন্টেল ছাড়া প্রায় সকল মাদারবোর্ড DDR3-2200 এর মত Bus Speed সাপোর্ট করে। আর কম Latency এর RAM কিনার চেষ্টা করবেন। Latency হচ্ছে RAM এ ডাটা এক্সেস করার সময়। Latency কম হলে RAM এ কম সময় ডাটা অবস্থান করবে। ফলে তা দ্রুত কাজ করবে। আর ডুয়াল চ্যানেল এর মাদারবোর্ডে একই মডেলের দুটি জমজ RAM ব্যাবহার করলে ডাটা ট্রান্সফার এর গতি দ্বিগুণ হয়ে যাবে।

*** ***-

অপটিকাল ড্রাইভ বলতে সিডি/ডিভিডি/ব্লু-রে ড্রাইভ কে বোঝানো হয়। এটি নিয়ে তেমন কিচু বলার নেই। তবে কিছু কথা জানা থাকলে ভাল। ডিভিডি এর ক্ষেত্রে ডাটা রিড স্পিড ১৬-২৮এক্স পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাই সর্বচ্চ স্পিড এর টা কেনার চেষ্টা করবেন। তবে আমার পরামর্শ হচ্ছে ব্লু-রে ড্রাইভ কিনতে পারলে ভাল। কেননা আর কিছুদিনের মধ্যে আমরা ব্লু-রে এর জগতে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। তাই সবসময় আপডেট টা কেনাই ভালো হবে। আর আমার মতে ASUS থেকে SAMSUNG/LITEON ভালো হবে। কারন আমি নিজে ৩ বার ও আমার প্রায় বেশিরভাগ বন্ধুরা একাধিকবার ASUS এর ওয়াররেনটি নিয়ে অনেক সমস্যাতে পড়েছি। তবে ব্লু-রে ড্রাইভ কিনলে ASUS এর বিকল্প নাই। কারন তারা এতে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্লু-রে ড্রাইভ রিডিং লেসার ইঞ্জিন ব্যবহার করেছে।
Samsung new slim portable Blu ray Writer SE 506AB optical disk drive কম্পিউটার সমাচার, ( RAM ) পর্ব ২Asus SBC 06D1S U USB External Bluray Drive Top কম্পিউটার সমাচার, ( RAM ) পর্ব ২
আজকে এখানেই শেষ করতে হবে। প্রচুর খিদা লেগেছে। আর একটি কত্থা

বিশ্বজুড়ে ডেস্কটপ কম্পিউটার এর বাজার আশঙ্কাজনক হারে মার খেয়ে যাচ্ছে। বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান আইডিসির সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, বছরের প্রথম তিন মাসে সারা বিশ্বে কম্পিউটার বিক্রি হয়েছে সাত কোটি ৬৩ লাখ, যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় ১৪ শতাংশ কম। প্রতিষ্ঠানটির মতে, মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ৮ অপারেটিং সিস্টেম বাজারে তেমনজনপ্রিয়তা না পাওয়ায় বিষয়টি কম্পিউটার বিক্রিতেও চূড়ান্ত প্রভাব ফেলেছে। এ ছাড়া স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট কম্পিউটারের জনপ্রিয়তা ডেস্কটপ কম্পিউটারের বাজার কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এ বিষয়ে আইডিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট বব ও’ডোনেল জানান, অপ্রত্যাশিতভাবে উইন্ডোজ ৮ অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের বাজার বৃদ্ধিতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। এ কারণে বিক্রির গতিও কমে গেছে। আইডিসির বিশ্লেষকদের মতে, কম্পিউটার বিক্রি কমার পেছনে শুধু উইন্ডোজ ৮ অপারেটিং সিস্টেম বা স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটই দায়ী নয়, বিশ্বের চলমান অর্থনৈতিক সংকটও যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে।এভাবে চলতে থাকলে হয়তো অচিরেই হারিয়ে যাবে ডেস্কটপ কম্পিউটার গুলো।

Level 0

আমি অ্যান্ড্রয়েড গেমওয়ালা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 17 টি টিউন ও 183 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

সুন্দর টিউন ।আমার অনেক কাজে লাগবে এটা। ধন্যবাদ

চমৎকার গুছিয়ে লিখেছেন সোজা প্রিয়তে আর নির্বাচিত হবার জন্যও ভোট দিলাম। আগামীতে আরো টিউন চাই।

ধন্যবাদ ।

অনেক তথ্য বহুল টিউন । ভাল লাগল।

    @Reaz Ul Islam: দোয়া করবেন আপনাদের ভাল লাগা আমার টিউন সার্থক ।।

thank you ভাই এতদিনে আমি এ বিষয়ে clear হতে পারলাম