সোশ্যাল মিডিয়ায় অবস্থান তৈরি করুন ৫ টি সহজ উপায়ে

টিউন বিভাগ সাহায্য/জিজ্ঞাসা
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

ফেসবুক, টুইটার, ভাইবার ইত্যাদির নাম শোনেনি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া আজকাল দুষ্কর। সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্তমানে একটিভ ইউজারের সংখ্যা প্রায় ২.৮ বিলিয়ন। ব্যবসা করার ক্ষেত্রে নিজের ব্যবসাকে মানুষের সামনে তুলে আনার বিকল্প নেই। তাই ভীষণ জনপ্রিয় এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে নিজের শক্ত ভিত গড়ে তোলা জরুরি।

এছাড়াও বর্তমানে বহুসংখ্যক ক্রেতা এবং ভোক্তা তাদের প্রিয় ব্র্যান্ডগুলোর সাথে যোগাযোগ রাখতে বা আপডেট পেতে বেছে নিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষই তাদের প্রিয় ব্র্যান্ডগুলো সম্পর্কে জানতে সোশ্যাল মিডিয়ার দ্বারস্থ হয়ে থাকেন।

তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি শক্ত মার্কেটিং কৌশল আপনাকে আপনার ব্র্যান্ডকে সবার কাছে পরিচিত করে তুলতে সাহায্য করবে। ফলে আপনার ফলোয়ার বাড়বে যারা কিনা আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করবে এবং আপনার পণ্য বিক্রির হারও বাড়তে থাকবে সমানতালে। আসলে এই ২০১৮ সালে এসে প্রত্যেকটি ব্র্যান্ড এবং তার ব্যবসায়ীদের উচিত সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং এর জন্য একটি দূর্দান্ত কৌশলের প্ল্যান রাখা।

এখানে দেয়া হচ্ছে আপনাদের জন্য অসাধারন ৫ টি টিপস যা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনাদের ব্র্যান্ডের চটকদার উপস্থিতি কৌশলের মাধ্যমে পণ্যের বিক্রি অসাধারনভাবে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে।

১। আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কারা তা ভালো করে জানুনঃ

ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রথম এবং প্রধান শর্তই হল আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কে জানা এবং বুঝতে পারা। আপনাকে সবার প্রথমেই জানতে হবে আপনার মার্কেটিং টা কাদের জন্য এবং সে অনুসারে আপনাকে কর্মপদ্ধতি এবং কৌশল নির্ধারন করতে হবে।

এর জন্য সবথেকে ভালো উপায় হচ্ছে একটি buyer persona তৈরি করে ফেলা। এটি হলো আদর্শ ক্রেতার একটি প্রোফাইল যাতে আপনি তাদের চাহিদা, সমস্যা, আপনি যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছেন এসব বিষয়গুলোর উল্লেখ থাকে। এটি মূলত আপনার তৈরি করা একটি ক্রেতার স্ট্যান্ডার্ড প্রোফাইল যার সাথে তুলনা করে আপনি কোনদিকে আপনার মনযোগটি বাড়াতে হবে তা বুঝতে পারবেন এবং কর্মপরিকল্পনা নির্ধারন করতে পারবেন।

২। সোশ্যাল মিডিয়াকে নিয়ে আপনার পরিকল্পনা তৈরি করুনঃ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনি যেসব টিউন করছেন, যা শেয়ার করছেন কিংবা যাই আপ্লোড করছেন না কেন, নিশ্চয়ই তার পেছনে কোন উদ্দেশ্য থাকে।
আপনি কি চান আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ুক? আপনি কি চান আপনার প্রোফাইলে ফলোয়ার অর্থ্যাত লাইক, কমেন্টস, শেয়ার ইত্যাদি বেড়ে চলুক?অথবা আপনি কি চান লিডিং পেইজগুলোর মধ্যে আপনার পেইজটিও জায়গা করে নিক?

যেকোন টিউন দেবার পেছনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা থাকা জরুরি। কারন এটি আপনাকে সেই উদ্দেশ্য সফল করার জন্য পোস্টটিকে কাটছাঁট বা উদ্দেশ্য অনুযায়ী কিভাবে এডিট করা যেতে পারে সে সম্পর্কে আইডিয়া দিয়ে থাকে।

৩। আকর্ষনীয় টিউন দিতে চেষ্টা করুনঃ

শুধুমাত্র মার্কেটিং নয়, যেকোন ক্ষেত্রেই সেই বিষয়টি সম্পর্কে যেকোন মূল্যবান তথ্য সমৃদ্ধ কন্টেন্টের চাহিদা হয়ে থাকে কয়েক গুণ বেশি। বিষয়টি সম্পর্কে যেকোন গুরুত্বপূর্ন উপদেশ, গাইডলাইন, সফলতা কিংবা ব্যর্থতার গল্প, টিপস কিংবা এক্সপার্ট হেল্প মানুষের কাছে বেশি আকর্ষনীয় হয়ে থাকে। যেমন ধরুন, আপনি যদি আপনার ব্র্যান্ডকে আপনার কাজের ক্ষেত্রে একটি লীড রোলে দেখতে চান তাহলে আপনাকে এ ধরনের কন্টেন্ট শেয়ার করতে হবে যা আপনার ব্র্যান্ডের প্রতি মানুষকে আকৃষ্ট করবে।

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং স্ট্যাটেজির ক্ষেত্রেও একই জিনিস প্রযোজ্য। পন্যের মার্কেটিং মানেই এই নয় যে আপনি আপনার পণ্যের গুনগান গেয়ে টিউন করতে থাকবেন। বরং বিষয়টি আরেকটু ব্যপক। আপনাকে ওই পন্য বা ব্যবসা সম্পর্কে এমন কন্টেন্ট শেয়ার করতে হবে যাতে মানুষের কাছে আপনার পণ্যের প্রতি আস্থা, বিশ্বাস জন্মায় এবং আপনার ফলোয়াররা আপনার পণ্য কেনার জন্য আকৃষ্ট হয়।

কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার আকর্ষনীয় টিউন করা যায় তার কিছু টিপস নিচে দেয়া হলঃ

লাইভ স্ট্রিমিং ভিডিও ব্যবহার করতে চেষ্টা করুন। ফেসবুকের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় তন গুণ বেশী মানুষ আগের থেকে রেকর্ড করে রাখা ভিডিওর চেয়ে লাইভ ভিডিও বেশি দেখে থাকে। আপনি পন্য সম্পর্কে প্রশ্নত্তর পর্ব নিয়ে হাজির হতে পারেন লাইভ ক্যামেরার সামনে। কিংবা সাম্প্রতিক কোন ব্লগ বিয়ে আলোচনা করতে পারেন বা পন্য সম্পর্কিত কোন ইভেন্টের বিহাইন্ড দ্য সিনে ক্রেতাদের অভিজ্ঞতা লাইভ ধারন করতে পারেন।

ছবি সহকারে টিউন দিতে চেষ্টা করুন। গবেষণায় দেখা গেছে ছবি সহ যেকোন লেখা বা টিউন ছবি ছাড়া টিউনের চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশি গুরুত্ব পেয়ে থাকে। আপনার ব্র্যান্ডের সাথে সম্পর্কিত যেকোন হাই কোয়ালিটি ইমেজ, সম্পর্কিত যেকোন ধরনের মিম, কিংবা গিফ এমনকি ছবি সহ যেকোন উদ্ধৃতি আপনার টিউনের আকর্ষন বাড়িয়ে দেবে কয়েক গুণ।

নিজের তৈরি ভিডিও টিউন করতে চেষ্টা করুন। কুইন্টলির একটি গবেষণায় সম্প্রতি দেখা গেছে সরাসরি আপলোডকৃত ভিডিও কন্টেন্টের ভিউয়ার রেইট অন্য সাইট থেকে শেয়ারকৃত কন্টেন্টের চেয়ে বেড়ে যায় প্রায় ১৮৬ শতাংশ এবং এটি শেয়ার হয়ে থাকে ১০০০ শতাংশ বেশী। আপনি নিজের ব্র্যান্ডের খুটিনাটি বিষয় জানিয়ে ভিডিও তৈরি করতে পারেন, ব্রান্ড সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর নিয়ে, কিংবা পন্যের বিস্তারিত জানিয়েও ভিডিও তৈরি করে তা টিউন করতে পারেন। এটি আপনার অডিয়েন্সের সাথে আপনার যোগাযগ বাড়িয়ে দেবে কয়েকগুন।

ব্লগ কন্টেন্টের লিঙ্ক টিউন করুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেকোন ব্লগ টিউন ভিজিটরদের আকর্ষন বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ। যখন আপনি কোন একটি ব্লগ টিউনের লিঙ্ক আপ্লোড করছেন খেয়াল রাখুন তাতে যেন একটি সম্পর্কিত এবং আকর্ষনীয় ছবি সংযুক্ত থাকে। এতে করে ভিউয়াররা যখন ছবিটি দেখে তাতে ক্লিক করবে তারা সরাসরি ব্লগটিতে চলে যেতে পারবে।

যেসব ভিজিটররা পড়তে পছন্দ করেন, এতে করে তারা তো জানতে পারছেনই; এমনকি যারা আর্টিকেল পড়তে তেমন একটা পছন্দ করেন না, তারাও ব্লগ কন্টেন্টে গিয়ে আকর্ষন বোধ করলে তা পড়েও ফেলতে পারেন! তবে সে জন্য লেখাটি উন্নতমানের ও আকর্ষনীয় হওয়া জরুরি।

৪। সামাজিক হতে চেষ্টা করুন:

এমনটা ভেবে বসে থাকা ভুল হবে যে, আপনি শুধুই একটি টিউন আপ্লোড করলেন, আর ক্রেতারা আপনার ব্র্যান্ডের প্রতি আকর্ষন বোধ করবে। সামাজিক হতে চেষ্টা করুন-আর যাই হক, জায়গাটি তো “সামাজিক” যোগাযোগ মাধ্যম।

আপনার ফলোয়ারদের কন্টেন্টে লাইক, কমেন্টস এবং শেয়ার করতে চেষ্টা করুন। যখন তারা আপনার কন্টেন্টে টিউমেন্ট করে, তাদের কমেন্টসে হাইলাইট করুন। তাদের এই অনুভূতি যোগান যেন তাদের মন্তব্যটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। যখন পেইজটি থেকে তারা রেসপন্স পাবে, তারা স্বাভাবিকভাবেই আপনার ব্র্যান্ডের প্রতি আকর্ষন বোধ করবে। এছাড়াও আপনি তাদের আপনাকে সাপোর্ট করার জন্য ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ জানাতে পারেন।

আপনি অবাক হয়ে যাবেন দেখে যে এই ছোট ছোট যোগাযোগ গুলো কিভাবে আপনার ফলোয়ারদের সাথে আপনার আন্তরিকতা বাড়িয়ে তুলবে।

৫। কৌশল বাস্তবায়নের সময় ফলাফল যাচাই করুন

শুধুই অন্ধের মত কোন কৌশল বাস্তবায়ন করতে না যেয়ে কিছুদিন পরপর এর ফলাফল যাচাই করলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার পরিশ্রম বিফলে যাচ্ছে কিনা। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট টুল যেমন Hot suite বা Buffer আপনাকে জানতে সাহায্য করবে যে আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব টিউন শেয়ার করছেন তাতে আপনি সর্বোচ্চ সংখ্যক ফলোয়ার রিচ করতে পারছেন কি না বা যতটুকু করার কথা তা পারছেন কি পারছেন না।

এটি খুবই গুরুত্বপুর্ন একটি তথ্য্‌, কারন এটি আপনাকে জানতে সাহায্য করবে যে কাস্টমার কি কি জিনিসে আকৃষ্ট হয় এবং কি ধরনের কন্টেন্ট শেয়ার করার প্রতি আপনার মনোযোগ দেয়া উচিত।

উপসংহার:

এই ছোট ছোট টিপস গুলো কাজে লাগানোর মাধ্যমে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া স্ট্র্যাটেজি আরো উন্নত হবে। আপনি বুঝতে পারবেন সোশ্যাল মিডিয়ায় অবস্থান তৈরির জন্য আপনার কৌশল গুলো ঠিক আছে কিনা। আপনার ব্র্যান্ডের পরিচিতি, মার্কেটিং, ফলোয়ার বাড়ানো, লাইক, টিউমেন্ট, শেয়ার বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি একটি লিডিং ব্র্যান্ড তৈরির জন্য আপনার পদক্ষেপগুলো আরো দৃঢ় করার জন্য উপরোক্ত টিপস এবং গাইডলাইন গুলো অনুসরন করতে পারেন।

Presented By Uttara Info Tech

Level 0

আমি সাইদুল ইসলাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 7 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

We are the best web development service provider of Bangladesh


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস