হযরত আলী রাঃ এর একটি অসাধারণ বিচক্ষণতা দেখুন মুগ্ধ না হয়ে পারবেন না গ্যারান্টি দিলাম

আজকের টিউনটি কোন ধরনের টেকনোলজি সম্পর্কিত নয়। তারপরও একটি অপ্রাসঙ্গিক টিউন করছি বিধায় মডারেটরের শুভ দৃষ্টি কামনা করছি। অবশ্য আমার টিউনটি অনেক হেল্পফুল জানার জন্য বা নিজের দক্ষতা যাচাই করার ক্ষেত্রে। আমি আজ বর্ণনা করব ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী রাঃ এর একটি সূক্ষ বিচার নিয়ে যা অবশ্যই আপনাকে মূগ্ধ করতে বাধ্য করবে।

একদা দুইজন লোক কোথাও যাচ্ছিল, ক্ষুদা অনুভব করায় রাস্তার পাশে দুজনই এক সাথে খেতে বসলো। তাদের একজনের কাছে ছিল ৫টি রুটি এবং অন্যজনের কাছে ছিল ৩টি রুটি। পথিমধ্যে তৃতিয় একজন লোক যাচ্ছিল তাদের পাশ কেটে। উভয়ই তৃতীয় ব্যক্তিটিকে ডাক দিয়ে বলল ভাই আসুন আমাদের সাথে খেতে বসুন।

তিনজনই একসাথে বসে খাওয়া দাওয়া শেষ করল এবংতৃতীয় ব্যক্তিটি যাওয়ার সময় তাদের দুজনকে খুশি হয়ে উপহার সরূপ ৮টি টাকা দিয়ে গেল। বাস বিপত্তিটা বাধে তখনই প্রথমজন বলল আমার যেহেতু রুটি ছিল ৫টি সেহেতু আমি পাঁচ টাকা নিবো আর তোমার ছিল তিনটি রুটি তাই তুমি পাবে তিন টাকা। কিন্তু দ্বিতীয়জন এই রায় মেনে না নিয়ে বলল যেহেতু ৮ টাকা দেওয়া হয়েছে তাই সমান সমান অর্থাৎ ৪টাকা করে ভাগ হবে। কিন্তু আবার প্রথমজন অর্থাৎ ৫ রুটি ওয়ালা এই রায় মেন নিতে রাজি ছিলনা তাই দুজনই হযরত আলী রাঃ এর দ্বারস্থ হলেন এর সমাধানের জন্য।

হয়রত আলী রাঃ পুরো ঘটনার আদ্যপান্থ শুনলেন এবং দ্বিতীয়জন অর্থাৎ তিন রুটি ওয়ালাকে লক্ষ করে বললেন তোমার সাথী তুমি তিন টাকা পাবে বলে যে রায় দিয়েছেন তা মেনে নাও যাতে তুমিই বেশী লাভবান হবে। কিন্তু  আমি রায় দিলে তুমি পাবে মাত্র এক টাকা। দ্বিতীয় ব্যক্তিটি বলল আপনি ন্যায় বিচার করে দিন তাতে যদি আমি এক টাকাও পাই তাই আমি মেনে নেব।

হযরত আলী রাঃ বললেন তোমাদের রুটি ছিল ৮টি আর তোমরা ৮টি রুটি খেয়েছ তিনজনে। তাহলে ধরে নেওয়া যায় প্র্রতিট রুটিতেই তোমাদের অংশিদারিত্ব ছিল (যেহেতু কে কতটুকু খেয়েছ তাঁর সঠিক পরিমাপ তোমাদের কারোরই জানা নাই) অর্থাৎ প্রতিটি রুটিকে তিনটি টুকরোয় বিভক্ত করা হয়েছে যে তিনটি টুকরোর তোমরা প্রত্যেকেই একটি করে ভক্ষণ করেছ। অতএব ৮টি রুটির সমষ্টি হয় ৮*৩=২৪ টি টুকরোতে। সুতরাং তোমরা প্রত্যেকেই খেয়েছ ৮টি করে টুকরো।

এবার হযরত আলী রাঃ আবার দ্বিতীয়জন অর্থাৎ তিন রুটিওয়ালাকে লক্ষ করে বললেন তোমার তিন রুটির সমষ্টি ৯টি টুকরো থেকে তুমি নিজেই খেয়েছ ৮ টুকরো এবং বাকি রইল মাত্র এক টুকরো। আর তৃতীয়জন অর্থাৎ তোমাদের মেহমান যিনি ৮ টাকা দিয়েছিলেন তিনি খেয়েছেন তোমার রুটির বাকি অংশ অর্থাৎ এক টুকরো। আর তোমার সাথী অর্থাৎ যে ৫ রুটির মালিক তার রুটি গুলোর সমষ্টি হয় যথাক্রমে ৫*৩=১৫ টুকরো এবং তোমাদের মেহমান সে ১৫ টুকরো থেকে ভক্ষণ করেছেন ৭ টুকরো রুটি। সুতরাং হিসাব স্পষ্ট যেহেতু তোমার রুটির অংশ থেকে মেহমান গ্রহণ করেছেন এক টুকরো তাই তুমি পাবে এক টাকা এবং তোমার সাথী থেকে গ্রহণ করেছে ৭ টুকরো তাই তোমার সাথী পাবে ৭ টাকা।

লোকটি এমন সূক্ষ বিচার দেখে হতভম্ব হয়ে গেল এবং অবনত মস্তকে হযরত আলী রাঃ এর বিচক্ষণতাপূর্ণ  রায় মেনে নিয়ে এক টাকাতেই সন্তোষ্ট চিত্তে ফিরে গেল।

তাহলে আজকের মত বিদায়, সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

ভাল লাগলে অবশ্যই জানাবেন। 

আমার ব্লগে ঘুরে আসার দাওয়াত রইল। 

Level 0

আমি kamrulbhuiyan। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 136 টি টিউন ও 407 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি খুবই সাধারন একজন মানুষ, কিছুই করিনা, মাঝে মাঝে ব্লগে লিখালিখি করি, আর অন্য সময় খেলাধুলায় ব্যাস্ত থাকি.....।।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

SubhanaAllah…
Thnx for sharing.. 🙂

সুবহানাল্লাহ। হাদিসটির সূত্র দিতে পারলে খুশি হতাম

    আসলে আমি এই ঘটনাটি পড়েছি আরবি একটি উপন্যাস থেকে। অবশ্য এটা কোন হাদিস নয়, এটা হলো আলী রাঃ এর একটি বিচক্ষণতাপূর্ণ রায়ের বর্ণনা।

সবার মন্তব্যগুলো দেখে সত্যি খুব ভাল লাগলো যে মানুষ এখনও ভাল কিছু পেতে চায়। সবাইকে ধন্যবাদ।

আমাদের দেশে যেখানে ন্যায়বিচার প্রায় ওঠেই গেছে সেখানে এইরূপ ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত সময়োপযোগি। খুব ভাল লাগল। লেখককে ধন্যবাদ।

    আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। আসলে আপনার এইভাবে উৎসাহ মূলক মন্তব্য করলে সামনে আরো ভাল কিছু লিখতে আগ্রহ তৈরী হবে নিশ্চই।

সত্যই অনেক শিক্ষা মূলক একটা ঘটনা

    কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ।

Level 2

Allahu Akbar
Subahan Allah