ল্যাপটপ কম্পিউটারের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছে আইপ্যাড প্রো!

টিউন বিভাগ আইওএস
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভাল। অনেকদিন পর টিউন করতে চলে এলাম। আজ  মূলত একটা খবর দেবার  জন্য আসা। আর সেটা হলো অ্যাপলের নতুন আইওএস সম্পর্কে অনেকে ইতোমধ্যেই ধারণা পেয়েছেন আবার অনেকে কৌতূহলী  হয়ে বসেও আছেন। দেরি না করে সরাসরি টিউনে চলে যাচ্ছি।

অ্যাপল নিয়ে প্রযুক্তিবিদদের আগ্রহ অনেকদিনের। শুধু আগ্রহ বললে ভুল হবে, এতে বারবার নতুন কিছু যোগ করার স্বপ্নও ছিল নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির। আর সেটা হয়েও এসেছে। প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নানা চড়াই উতরাই পার করে এখনও পর্যন্ত সুনামের সাথে চলে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহকের চাহিদা, নিরাপত্তা, বিনোদন, অভ্যাস সবকিছুকে ভিত্তি করেই এতকাল ধরে সাফল্য ধরে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। আর তাই অ্যাপল নিয়ে জল্পনা-কল্পনার কমতি নেই বিশ্বে।

এবার সব জল্পনা-কল্পনাকে উড়িয়ে দিয়ে অ্যাপল তাদের নতুন প্রোডাক্ট সম্পর্কে বেশ চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ করেছে। ধারণা করা হচ্ছে এ সিজনেই অ্যাপল তাদের যুগান্তকারী কিছু পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। চলুন, একটু বিস্তারিত দেখা যাক।

গত শুক্রবার কম্পিউটার ও আইফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল তাদের সামনে মাসে আসন্ন কিছু সফটওয়্যারের ভিডিও প্রকাশ করেছে। নতুন ছয় ভিডিওতে আইওএস ১১ তে আইপ্যাড প্রো’র নতুন ফিচারগুলো দেখানো হয়েছে। যদিও এখনও তা পরীক্ষামূলক বা বেটা ভার্সন। যারা অ্যাপল সম্পর্কে জানেন তারা হয়তো অবাক হচ্ছেন। আর অবাক হবারই কথা।

কারণ, অ্যাপল সাধারণত বেটা সফটওয়্যারের জন্য কোনো বিজ্ঞাপন করে না। বরং এতদিন ধরে এটা তাদের একরকম আভিজাত্যই প্রকাশ করতো। আর বেটা ভার্সনের বিজ্ঞাপন দেখে অনেক গ্রাহকই একটু অবাক হয়ে গেছেন। অবাক হবারই কথা। অ্যাপল এতকিছু পরিবর্তন করেছে সেটা দেখলে কেউই অবাক না হয়ে পারে না। তাই ধারণা করা হচ্ছে যে অ্যাপল সামনে নতুন কোনো চমক দেখাতে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় সাম্প্রতিক বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন বক্তব্য ও আলোচনায় সেটা একরকম স্পষ্ট।

বিজনেস ইনসাইডার

কারণ, অ্যাপল যখন জুন মাসে তাদের নতুন আইপ্যাড প্রো বাজারে ছাড়লো, এর কিছু ফিচার ছিলো যার সফটওয়্যার আপডেটগুলো প্রায় ল্যাপটপের মতো। অ্যাপল জানিয়েছে যে আইওএস ১১ এবারই সবার কাছে পৌঁছে যাবে। 'এবারই সবার কাছে পৌঁছে যাবে' কথাটিতেই অ্যাপলের নতুনত্ব আর সার্বজনীনতা প্রকাশ পায়। আর তাই ধারণা করা হচ্ছে এবার হয়তো অ্যাপল বড়কিছু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তা না হলে এত আয়োজন কেন! নতুন আইপ্যাড প্রো-তে শক্তিশালী প্রসেসর এবং আরো বড় স্ক্রিনসহ কিছু নতুন হার্ডওয়্যার আপডেট যুক্ত হয়েছে, কিন্তু কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফিচার যেমন ডেস্কটপের স্টাইল ডক, ড্রাগ ও ড্রপ এবং মাল্টিটাস্কিং সুবিধাগুলো যুক্ত করা হয় নি।

এ সম্পর্কে অ্যাপল-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট গ্রেইগ জোজউইয়াক গত জুন মাসে আইপ্যাড প্রো রিলিজ হবার সময় বলেন,

“অবশ্যই সেগুলো যুক্ত হচ্ছে, আর সেটা আইওএস ১০-এ। তবে আপনি চাইলে সেগুলোকে এবারই আইওএস ১১-তে ফ্রি আপডেট করে নিতে পারবেন”। আইপ্যাডের সাথে তুলনায় তিনি আরো বলেন,“আপনারা আইওএস ১১ এর সম্পূর্ণ চমক এখনও দেখেন নি ”।

বিজনেস ইনসাইডার-এর প্রতিনিধি স্টেভ কোভাচ গত জুনে তার ভিডিও রিভিউ-তে আইপ্যাডের উন্নতিতে অ্যাপল-এর গুরুত্বারোপের কথা বলেন।তিনি বলেন,

"আসলে, আইপ্যাড যে ল্যাপটপের স্থান দখল করবে, বিষয়টা সম্পূর্ণ এরকম নয়। এখানে কিছু ব্যাপার আছে। যেমন, কি-বোর্ডের ব্যাপারটা চিন্তা করলেই বুঝবেন। (আইপ্যাডে কোনোপ্রকার কানেক্টর কি-বোর্ড থাকে না)। কিন্তু বছরের শেষে আইওএস ১১ বাজারে আসছে, তাও আবার আইপ্যাড সফটওয়্যারের আরো আপডেট নিয়ে যা কিছু কিছু ক্ষেত্রে ম্যাক-এর মতো ক্ষমতাসম্পন্ন। যেমন, নতুন ফাইল সিস্টেম ও মাল্টিটাস্কিং সুবিধা। এর মাধ্যমে সফটওয়্যারগুলো যেকোনো উইন্ডো'র উপরে চালানো যাবে। আর নতুন ডক সিস্টেমটা এমন যে আপনি চাইলে হোমস্ক্রিনে না গিয়েই যেকোন অ্যাপ্লিকেশন চালু করতে পারবেন”।

আইপ্যাডের ম্যাক কম্পিউটারের মতো ডক

এর আগে কখনও অ্যাপল আসন্ন অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে এরকম ভিডিও প্রকাশ করে নি। তাই এটা স্পষ্ট যে অ্যাপল অদূর ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্য্যক্রম ধরে রাখতে চাচ্ছে। আর খুব সম্ভবত তা আইফোন ৮ এর নতুন সংস্করণ চালু করার জন্য। উল্লেখ্য যে বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে গত সেপ্টেম্বর-য়েই অ্যাপল নতুন আইফোন রিলিজ করেছে।

তারপর নতুন কোনো ঘোষণা অ্যাপলের পক্ষ থেকে আসে নি।  তবে অবাক করা বিষয় এই যে নতুন আইফোন’এর ঘোষণা দেবার এক সপ্তাহ পরেই অ্যাপল আইওএস এর নতুন ভার্সন রিলিজ করলো। নতুন আইপ্যাড প্রো কতটা  ব্যবসা সফল হবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। তবে এতকিছু পরিবর্তন ও গ্রাহকের সুবিধা-অসুবিধা মাথায় রেখে তৈরি করা আইপ্যাড প্রো বেশ ভালভাবেই বাজারে কাটবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

অ্যাপল’এর নতুন ভিডিওগুলো দেখতে পারেন। ভালো লাগবে। এসব ভিডিও’র অনেকগুলোতে দামী আইপ্যাড প্রো দেখানো হয়েছে। তবে নতুন সফটওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে গ্রাহকরা আইপ্যাডের অন্যান্য সফটওয়্যার ফিচারগুলো উপভোগ করতে পারবেন।

আমি বিশ্বাস করি এই টিউনের বেশিরভাগ পাঠকই আমার মতো মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান। আর তাই আমাদের মতো বাঙালীদের জন্য দুধের স্বাদ ঘোলেই মিটাতে হবে। আপাতত ভিডিও দেখেই পেট ভরাতে হবে। আর আমরা তো বলা চলে স্যামসাং, ওয়ালটন, সিম্ফোনি আর ইদানিংকালের Oppo-সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি, তাই আমাদের  জন্য আইফোন না হলেও ক্ষতি নেই। সে যাই হোক।

নিচে কিছু ভিডিও দেয়া আছে যেগুলো দেখলে নতুন আইপ্যাড প্রো সম্পর্কে বেশ ভাল আইডিয়া পাবেন। এছাড়াও এর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আইওএস ১১ এর সকল আইপ্যাডে নতুন ম্যাক’এর মতো আইপ্যাড ডক পাবেন — শুধু আইপ্যাড প্রো মডেলেই নয়।

সকল আইপ্যাডেই থাকছে "Files" নামক একটি অ্যাপ্লিকেশন যা আইপ্যাডের নতুন ফাইল সিস্টেম।

আইপ্যাডগুলোতে আরো থাকছে একইসাথে অনেকগুলোও অ্যাপ্লিকেশন চালানোর নতুন ও আরো সহজ পদ্ধতি

অ্যাপল’এর স্টাইলাস, পেন্সিল যা শুধু আইপ্যাড প্রো-তেই কাজ করে।

আপনি যদি অ্যাপল পেন্সিল দিয়ে লকস্ক্রিনে চাপ দেন, সাথে সাথে আইপ্যাডটি চালু হবে।

কিছু প্রয়োজনীয় শর্টকাট ও গেশ্চার যার মাধ্যমে আপনি আরো সহজে বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে জানতে পারবেন।

টিউনটি কেমন লাগলো তা জানাতে ভুলবেন না। আর টিউনটি সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে টিউমেন্ট বক্সে টিউমেন্ট করুন।ভাল থাকবেন সবাই। ধন্যবাদ সবাইকে।

Level 2

আমি মামুন মেহেদী। Civil Engineer, The Builders, Bogra। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 92 টি টিউন ও 360 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

আমি আপনার অবহেলিত ও অপ্রকাশিত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস