নোকিয়া এবং অ্যান্ড্রয়েড এর সাতকাহন


“নোকিয়া” মোবাইল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনেকের হৃদয়ে জায়গা দখল করতে সার্থক হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি। নকিয়ার জনপ্রিয়তার পাওয়ার মূল রহস্য হলো এরা সবচেয়ে ভালো মানের হার্ডওয়্যার দিয়ে ফোন প্রস্তুত করে থাকে। অল্প-কিছুদিন আগেই জানা যায় নকিয়ার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের কথা। তাই স্মার্টফোন প্রেমীদের দৃষ্টি ছিলো অ্যান্ড্রয়েড এবং নকিয়ার নিজস্ব গুণ মিলিয়ে কেমন একটি সেট তৈরি হতে পারে সেইদিকে।


নোকিয়ার এক্স সিরিজ:
নোকিয়া এক্সমোবাইল জগতের বৃহত্তম এই প্রদর্শনীতে নোকিয়া তাদের প্রথম অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। এতদিন টেক-মহলে কেবল ‘নোকিয়া এক্স’ নামের একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনের কথা শোনা গেলেও অবশেষে একই সঙ্গে অ্যান্ড্রয়েড-চালিত তিনটি স্মার্টফোনের ঘোষণা দিয়েছে নোকিয়া।বিষয়টা অবাক করার মতো হলেও ফোনগুলোর স্পেসিফিকেশন হতবাক করে দিবে। নকিয়া তাদের এই নতুন অ্যান্ড্রয়েড ফোন সিরিজের নাম রেখেছে নোকিয়া এক্স ফোন সিরিজ।


অপারেটিং সিস্টেম:
অ্যান্ড্রয়েডের ফর্ক ভার্সনের উপর তৈরি করা এই অপারেটিং সিস্টেম এরও নাম দেয়া হয়েছে নোকিয়া এক্স সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্ম। নকিয়ার মতে এটিই এক্স সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্মের প্রথম তিনটি স্মার্টফোন।তবে একই ভাবে অ্যামাজন তাদের কিন্ডল ট্যাবলেটে অ্যান্ড্রয়েড কর্নেল ব্যবহার করে থাকে।


ফোন তিনটির মডেল:
নোকিয়ার এই স্মার্টফোন তিনটির নাম রেখেছে:

১.নোকিয়া এক্স
২. এক্স প্লাস
৩.এক্সএল।

তিনটি প্রায় একই ধরনের এই স্মার্টফোনগুলোর মূল্য ধরা হয়েছে ৮৯ -১০৯ ইউরো। নোকিয়ার বর্তমান সিইও স্টিফেন ইলোপের মতে, তারা তাদের গ্রাহকে একাধিক অপারেটিং সিস্টেম থেকে বাছাই করার সুযোগ দিতে চায়। আর সেই উদ্দেশ্য থেকেই এসেছে নোকিয়া এক্স।


হার্ডওয়্যার:
নোকিয়া এই স্মার্টফোনগুলো মূলত প্রস্তুত করেছে সেইসব মার্কেটকে লক্ষ্য করে যেখানে এখনও কমদামী স্মার্টফোনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই সব অঞ্চলের আঞ্চলিক মোবাইল অপারেটরদের প্রদান করা স্বল্পমূল্যের স্মার্টফোনের সাথে প্রতিযোগিতা করতেই নোকিয়া মূলত উন্মুক্ত করেছে এই


কি থাকছে নোকিয়ার অ্যান্ড্রয়েডে?
ফোনের জগতে নোকিয়া ফোনের স্থায়িত্ব ও ডিজাইন সবসময়ই ব্যতিক্রমী ও উদ্ভাবনী ছিল। যে কারণে ফিচার ফোনের বাজারে আজও নোকিয়া বেশ জনপ্রিয়। তবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের বাজারে কেবল সুন্দর ডিজাইন আর চকচকে রঙ দিয়ে মন গলানো যাবে না। লাগবে নূন্যতম ভালো হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার পারফরম্যান্স। দুঃখের বিষয় হলো, বেশিরভাগ প্রতিবেদকরাই নোকিয়ার অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলো হাতে নিয়ে হতাশ হয়েছেন। কিন্তু কেন?


স্পেসিফিকেশন:
ডিসপ্লে: নোকিয়া এক্স সিরিজের এক্স ও এক্স প্লাস ফোনে রয়েছে ৮০০x৪৮০ রেজুলেশনের ৪ইঞ্চি আইপিএস ডিসপ্লে। আর এক্সএল এর ক্ষেত্রে এই ডিসপ্লের আকার ৫ ইঞ্চি।
প্রসেসর: এছাড়া এই সিরিজের তিনটি ফোনেই ব্যবহার করা হয়েছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮২২৫ মডেলের ১ গিগাহার্জ প্রসেসর।এই প্রসেসর মূলত এআরএমের কর্টেক্স এ৫ আর্কিটেকচার ভিত্তিক যার সাথে জিপিউ হিসেবে আছে কোয়ালকম আড্রিনো ২০৩। এই প্রসেসর মূলত স্মার্টফোনে সাধারণ মানের কাজ করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
র‍্যাম: র‍্যামের দিক থেকে নোকিয়া এক্সে আছে ৫১২ মেগাবাইট র্যাআম এবং নোকিয়া এক্স প্লাস এবং এক্সএলে আছে ৭৬৮ মেগাবাইট র্যাআম। ইন্টারনাল স্টোরেজ হিসেবে আছে ৪ গিগাবাইট স্টোরেজ যা মাইক্রোএসডি কার্ডের মাধ্যমে ৩২ গিগাবাইট পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। নোকিয়া এক্স প্লাস এবং এক্সএলের ক্ষেত্রে একটি ৪ গিগাবাইট মেমোরি কার্ড ফ্রিতে প্রদান করা হবে।
ক্যামেরা: নোকিয়া এক্স এবং এক্সপ্লাস উভয় ফোনেই আছে ফ্ল্যাশবিহীন ৩ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। এই দুইফোনের ক্ষেত্রে স্কাইপ অথবা ভিডিও কল করার জন্যে সেকেন্ডারি বা ফ্রন্ট সাইডে কোন ক্যামেরা নেই। অপরদিকে এক্সএলে আছে ৫ মেগাপিক্সেল অটোফোকাস ক্যামেরা এবং ফ্ল্যাশ এবং স্কাইপ ও ভিডিও কল করার জন্যে আছে সামনে ২ মেগাপিক্সেলের একটি ক্যামেরা।
অন্যান্য: এসবের পাশাপাশি তিনটি ফোনেই আছে ওয়াইফাই, জিপিএস,৩জি ও ডুয়াল সিম সুবিধা।


অ্যান্ড্রয়েড সফটওয়্যার: নোকিয়া এক্সসফটওয়্যার উইন্ডোজ, অ্যান্ড্রয়েড এবং নোকিয়া আশা ওএস প্ল্যাটফর্মকে একত্র করা হয়েছে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড জেলি বিন ৪.১.২ ভিত্তিক অপেনসোর্স লিনাক্স কর্ণেল। যেহেতু খুব শক্তিশালী প্রসেসর অথবা খুব বেশি র্যা ম ব্যবহার করা হয়নি এই ফোনের পারফরম্যান্স বেশ ল্যাগ করবে। আর যারা এই ফোনের হ্যান্ডস অন অথবা এর উন্মোচন অনুষ্ঠান খেয়াল করেছেন তারাও বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।


অ্যাপ: নামে অ্যান্ড্রয়েড হলেও এতে নেই কোন গুগলের সুবিধা অথবা প্লে স্টোর, বরং ব্যবহার করা হয়েছে নোকিয়ার নিজস্ব স্টোর।যদি নোকিয়ার স্টোরে কোন অ্যাপ না পান তবে তাদের চুক্তিবদ্ধ অন্য অ্যাপস্টোরে সে অ্যাপ থাকলে তার লিঙ্কও প্রদান করবে নোকিয়া। এক্ষেত্রে আছে রাশিয়ার ইয়ান্ডেক্স এবং চায়নার ওয়ানমোবাইল। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েডের অ্যাপগুলোতে খুব সামান্য পরিবর্তন এনেই প্রায় সকল অ্যাপই চালানো যাবে এই ফোনে।


বিল্ডিন অ্যাপ্স: এর মধ্যে ডিফোল্ট অ্যাপ হিসেবে থাকছে স্কাইপ, ওয়ানড্রাইভ, আউটলুক প্রভৃতি মাইক্রোসফট সেবা। মাইক্রোসফট সব নোকিয়া এক্স ব্যবহারকারীকে বিনামূল্যে বিশ্বের ৬০টি দেশের ল্যান্ডলাইনে ফোন করতে দিবে স্কাইপের মাধ্যমে। ওয়ানড্রাইভে প্রদান করবে ১০ গিগাবাইট স্টোরেজও।
তবুও তো সাধারণ গ্রাহকের কথা ভেবে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, নোকিয়া কি পারবে এই ফোন দিয়ে গ্রাহকের মন জয় করতে?

প্রথম হ্যান্ডস অন ভিডিও ফুটেজ নোকিয়া এক্স :

::অন্ড্রয়েড এর নিত্বনতুন টিপ্স রিভিউ ও অ্যাপ্স পেতে আমাদের অ্যান্ড্রয়েড পেজে যোগদিন::

Level 0

আমি আর,কে রকি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 23 টি টিউন ও 179 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি অতিশয় এক সাধারণ মানুষ। কম্পিউটার & নিউ প্রযুক্তি নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করি। বন্ধুদের হেল্প করতে পারলে ভালো লাগে। আমার সীমিত সঞ্চিত জ্ঞান বন্ধুনের সাথে সেয়ার করতে পছন্দ করি। দক্ষ ভিডিও এডিটর হতে চাই,নিজস্ব এ্যাডফার্ম স্থাপনের স্বপ্ন দেখি। বর্তমানে তৃ-মাত্রিক মিডিয়া নামক নিজস্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করছি। দেশ & মাতৃভাষাকে...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

Sorry to know

নকিয়া এখন সমালোচনার শীর্ষে মনেহয়।

    @নেট মাস্টার: ভাই, সমালোচনা থেকে সম বাদ দিলেই আলোচনা। আর এই প্রতিষ্ঠান গুলো সবসময় আলোচনায় বা আলোচনার শীর্ষে থাকতে চায়!!!

Level 0

আমি কখনো কোন ও টিউনে এ টিউমেন্ট করি না , কিন্তু আপনি বাধ্য করলেন । টিউন টি খুব ভালো হয়েছে

    🙂 ভাই sugata2: আমিও অনেক দিন ধরেই টিউমেন্টরকে রেসপন্স করলেও ধন্যবাদ দেই না। কিন্তু আপনাকে ধন্যবাদ না দিয়ে থাকতে পারলাম না। ধন্যবাদ অনুপ্রেরণা মূলক টিউমেন্ট এর জন্য!!!

নকিয়া “এক্স” সিরিজ হচ্ছে “আশা”র প্রায় সমকক্ষ একটা সিরিজ। নকিয়ার ফোন ইউনিট যেহেতু কাগজে-কলমে মাইক্রোসফটের হয়ে গেছে তাই তারা এমন কোন এন্ডয়েড ফোন বানাবে না যেটা উইন্ডোজের সমকক্ষ হতে পারে। যেমন নকিয়ার বর্তমান ফ্ল্যাগশিপ সেট “লুমিয়া আইকন” এর RAM ২ গিগা অথচ উইন্ডোজ ফোন মাত্র ১ গিগাতেই খুবই ভাল চলতে পারে যেহেতু এটা অ্যান্ড্রয়েডের মত জাভা দিয়ে লেখা না, বরং C, C++ ইত্যাদি দিয়ে লেখা। আর অপেক্ষাকৃত স্লো অ্যান্ড্রয়েডের জন্য মাত্র ৭৬৮ মেগা! তবে যেহেতু নকিয়া ব্যাপক মাত্রায় মডিফাই করেছে সেহেতু পারফর্মেন্স তত খারাপ নাও হতে পারে যেহেতু এই(Memory management)র কাজে আগে তাদের দক্ষতা ছিল। যদিও তাদের সকল ইঞ্জিনিয়ার নাই। “এক্স” সিরিজের লক্ষ্য মানুষকে অ্যান্ড্রয়েডের বোতলে মাইক্রোসফটের সার্ভিস ও উইন্ডোজ ফোন ইন্টারফেসে অভ্যস্ত করা। এই বুদ্ধিটা নকিয়ার পতনের এক মুল নায়ক ও বর্তমান সিও মাইক্রোসফট কর্মচারী স্টিফেন ইলোপের মাথা থেকে বের হয়েছে। দেখা যাক কাজ করে কিনা। ফিনল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমে তার ডাকনাম “ট্রোজান হর্স”(যেহেতু ট্রোজান হর্স যেভাবে কম্পিউটারে একবার ঢুকে তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সিস্টেম নষ্ট করে দেয় সেও নকিয়ার সিও হয়ে ঢুকে মাইক্রোসফটের কর্মচারী হিসেবে কাজ করে নকিয়াকে ধংস করেছে বলে তাদের দাবী)। তার অযৌক্তিক জেদে নকিয়া সময়মত অ্যান্ড্রয়েডে জেতে পারেনি, ইন্টেল ও নকিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি অসাধারণ “মিগো” কেও তারা ত্যাগ করে ১% মার্কেট শেয়ারের উইন্ডোজ ফোনের সাথে চুক্তি করেছে অথচ সিম্বিয়ানেরও শেয়ার ছিল তখন ২৭%! উইন্ডোজ ফোন বর্তমানে সিস্টেম হিসেবে ভাল ও অ্যান্ড্রয়েডের থেকেও অনেক নিরাপদ তবে এশিয়ার মানুষ যে ধরনের পূর্ণস্বাধীনতা চায় তা সেখানে পাওয়া কিছুটা কঠিন। তবে নকিয়া N9 থেকে নকিয়ার ফ্ল্যাগশিপ সেটগুলো যারা ব্যাবহার করেছে তারা স্বীকার করবেন যে নকিয়া এখনো সেরা ফোন নির্মাতা। “কিন্তু আজকাল শুধু সেরা ফোন বানালেই চলেনা, মার্কেটিংই আজ মুল”- এনগেজেট। তবে মার্কিন পণ্য বর্জনের হিসেবে পরের বছর থেকে নকিয়ার ফোন আর কিনব না। তবে তাদের ম্যাপ(here.com) ব্যাবহার করব কারন এটা মুল নকিয়ার 🙂

    ভাই@Junaid Ahmed Shawon: “এক্স” সিরিজের লক্ষ্য মানুষকে অ্যান্ড্রয়েডের বোতলে মাইক্রোসফটের সার্ভিস ও উইন্ডোজ ফোন ইন্টারফেসে অভ্যস্ত করা। কথাটা ভালো লাগলো এবং আমি আপনার সাথে এ বিষয়ে একমত। ক্যানোনয়, এরা গুগোল প্লেষ্টোর,ম্যাপ্স,জিমেইল,হ্যাংগাউট সহ অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড/গুগোল ফিচার গুলো ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। তবে আশার কথা হলো, নকিয়ার এই ফোনটিকে রুট করা যাবে বলে তারা স্পষ্ট জানিয়েছে। আর রুট করলে ফোনের রোমে কি কি করা সম্ভব সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না।আর আমাদের অ্যান্ড্রয়েড ডেভোলপার রাও থেমে থাকবে না। আর এরই মধ্যেই XDA তে এই ব্যাপারে কার্যক্রম শুরুও হয়ে গেছে। এটি দেখুন

agei net e deksi …..ato kom ram cpu display die colbe na tobe kom budget e baloi korbe mone hoy

Level 2

কেন ভায়া মার্কিন পন্য ব্যাবহার করবেন না কেন? কি করছে মার্কিন আপনার? প্লাসে মাইনাসে টাকা গুলা একটা বিশেষ পক্ষের কাছেই যাবে।

ফালতু সেট,ফ্লপ খাবে আশা করছি 😐