এবারও ডাব্লিউএসআইএস অ্যাওয়ার্ডে বাংলাদেশ দেশি সাতটি প্রকল্পকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানালেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী

টিউন বিভাগ খবর
প্রকাশিত

তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মৌলিক ও জনকল্যাণকর প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও এ স¤পর্কিত সেবা প্রদানের স্বীকৃতি হিসাবে প্রতিবছর জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি (ডাব্লিউএসআইএস)-২০১৫ পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর বাস্তবায়িত প্রকল্প ‘ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র’ গতবছর আন্তর্জাতিক এই পুরস্কার পায়। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকায় চারটি ক্যাটাগরিতে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশের সাতটি উদ্যোগ। উদ্যোগগুলো হলো অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশনের ‘শিক্ষক বাতায়ন’, অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন ও বেসিসের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত ‘জাতীয় তথ্য বাতায়ন’ এবং বেসিসের সদস্য কো¤পানি সিনেসিস আইটির মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক প্রকল্প ‘এমহেলথ’, প্রাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশের কৃষি তথ্যসেবা বিষয়ক প্রকল্প ‘হেলো ১৬১২৩’, এমপাওয়ার সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ‘আমাদের ডাক্তার’ ও ‘ফার্মার কোয়ারি সিস্টেম’, উইন মিয়াকি লিমিটেডের ‘কৃষি তথ্য সার্ভিস ২৭৬৭৬’। আর এই সাতটি প্রকল্পকে ভোট প্রদানের মাধ্যমে পুরস্কারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সবার কাছে ভোট চেয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি।

রবিবার আগারগাঁওস্থ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি শামীম আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক ও মহাপরিচালক (প্রশাসন) কবির বিন আনোয়ার। বেসিসের নির্বাহী পরিচালক সামি আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিনেসিস আইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহরাব আহমেদ চৌধুরী, এমপাওয়ার সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ই-এগ্রিকালচার বিশেষজ্ঞ মো. নজরুল ইসলাম।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডাব্লিউএসআইএস এর প্রকল্প পুরস্কার তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে উদ্যোগ ও বাস্তবায়নের বড় ধরনের স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়ন এবং ৫ বছরের মধ্যে মানুষের জীবনমানে ইতিবাচক পরিবর্তনের স্বীকৃতিস্বরূপ গতবছর এটুআইকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। সেটাই প্রথম বাংলাদেশের কোনো উদ্যোগ ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটির চূড়ান্ত পর্যায়ে পুরস্কৃত হয়। এবার আমাদের সামনে রয়েছে সাতটি প্রকল্প। ২৫ হাজার ওয়েবসাইট সমৃদ্ধ জাতীয় তথ্য বাতায়ন বিশ্বের সর্ববৃহৎ ওয়েব পোর্টাল। আর এর মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় সরকারি সকল সেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এছাড়া শিক্ষকদের মানোন্নয়ন ও দেশের শিক্ষাখাতকে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিতে তৈরি করা হয়েছে “শিক্ষক বাতায়ন”। এছাড়া বেসরকারিভাবে তৈরি এমহেলথ প্রকল্পটি এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি মানুষকে ঘরে বসেই চিকিৎসা সেবা ও তথ্য পাওয়ার সুবিধা দিয়েছে। এছাড়া দেশি অন্যান্য আরও চারটি প্রকল্প মিলে মোট সাতটি প্রকল্পই আন্তর্জাতিকভাবে বিজয়ী হওয়ার যোগ্য। আর এজন্য প্রয়োজন সর্বাধিক সংখ্যক ভোট। তাই বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় দ্রুতগতিতে অনেকাংশে এগিয়ে গেছে এটির স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সকলের উচিত ভোট দেওয়া। তাই আসুন সবাই সম্মিলিতভাবে ভোট দিয়ে আমাদের প্রাপ্য স্বীকৃতি অর্জন করে নিই।

আইসিটি সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, জীবন ধারণের প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও সরকারি-বেসরকারি ই-সেবা পাচ্ছে। তেমনই সাতটি সেবা এবারের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে। আমাদের সবার উচিত প্রকল্পগুলোকে ভোট দেওয়া। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদাকে সমুন্নত করার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগণ্য ভূমিকা রাখা।

বেসিস সভাপতি শামীম আহসান বলেন, এবারের প্রতিযোগিতার জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত ন্যাশনাল পোর্টাল ও এমহেলথ এর প্রথমটি এটুআইয়ের সাথে বেসিস ও দ্বিতীয়টি বেসিসের সদস্য কোম্পানি সিনেসিস আইটি বাস্তবায়ন করেছে। এছাড়া রয়েছে এটুআইয়ের শিক্ষক বাতায়ন প্রকল্প। মোট সাতটি বাংলাদেশি প্রকল্প রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে গতবারের মতো আন্তর্জাতিক এই স্বীকৃতি পেলে আরেকটি বিশাল মাইলফলক হয়ে উঠবে। গতবারের পুরস্কার জেতার পর কয়েকটি দেশ তাদের দেশেও ‘ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র’ প্রকল্প বাস্তবায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যেই মালদ্বীপ এ বিষয়ে সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর করেছে। এবারও যদি আমরা পুরস্কার জিততে পারি তাহলে এ ধরণের কাজের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। আর বেসিসের সদস্য কোম্পানিগুলো এই কাজ করতে পারবে। ফলে ব্যবসায়িক লাভের পাশাপাশি পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন হবে। এতে ২০১৮ সালের মধ্যে বেসিসের ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ ভিশনের অন্যতম পিলার তথ্যপ্রযুক্তি খাতের রফতানি আয় ১ বিলিয়ন ডলার অর্জনে সহায়ক হবে। তাই আসুন সবাই তথ্যপ্রযুক্তি খাতের এই বড় আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্তিতে ভোট দিই। বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিই, বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তির পরবর্তী গন্তব্যস্থল।

এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার বলেন, সরকারিভাবে দেশের ই-গভর্নেন্সসহ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প। আশাকরি গতবারের মতো এবারও আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারবো।

সিনেসিস আইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহরাব আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘এমহেলথ’ গত পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি জনগোষ্ঠীকে মোবাইলের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ প্রদান করেছে। এখনও প্রতিদিন প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষ কল করে এই সেবা নিচ্ছেন। পাশাপাশি ২ লাখ ৫০ হাজারেরও অধিক মানুষ প্রতিদিন এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা ও পরামর্শ পাচ্ছেন। বর্তমানে এই সেবা প্রদানে ৬৫ জনেরও অধিক এমবিবিএস ডাক্তার দিনরাত ২৪ ঘণ্টা নিয়োজিত আছেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আগামী ১ মে পর্যন্ত ভোট দেওয়া যাবে। ভোট দিতে যঃঃঢ়://মড়ড়.মষ/হ২ঙমপপ ঠিকানায় গিয়ে ই-মেইল ও পাসওয়ার্ড লিখে নাম নিবন্ধন করতে হবে। মেইলে ফিরতি বার্তার মাধ্যমে চূড়ান্ত নিবন্ধনের জন্য একটি লিংক আসবে। সেখানে ক্লিক করে নিবন্ধন স¤পন্ন করতে হবে। এরপর লগইন পেজে ইউজার নাম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ক্লিক করে ভোট দিতে হবে।

এক্ষেত্রে ভোটিং পেজে এস অর্গানাইজেশন নেম অংশে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন, টাইপ অংশে গভর্নমেন্ট এবং কান্ট্রি অংশে বাংলাদেশ লিখে সাবমিট ক্লিক করতে হবে। এরপর ভোট অপশনে ক্লিক করতে হবে। তারপর ১ থেকে ১৮ পর্যন্ত সিরিয়ালের পেজের ৩, ৪, ১০ ও ১৩ নম্বর ক্যাটাগরিতে থাকা বাংলাদেশি প্রকল্পগুলোকে ভোট দিতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, এই চারটি ক্যাটাগরি ছাড়াও বাকি ক্যাটাগরিতে ভোট প্রদান করতে হবে। একটি দেশ একবার শুধুমাত্র দুইটি ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হতে পারবে। আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের আয়োজনে আগামী ২৫ থেকে ২৯ মে জেনেভায় অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে এই পুরস্কার হস্তান্তর করা হবে।

Level 0

আমি বেসিস BASIS। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 46 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস