আসুন জেনে নিই IoT কি? আর এটি কীভাবে কাজ করে? এর সুবিধা ও অসুবিধা গুলো কী কী?

Level 3
Computer Operator and Web Designer, Praxis Garments Ltd., Mymensingh

IoT কি তা জানতে হলে সর্বপ্রথম আমাদেরকে এর পূর্ণ অর্থ জানতে হবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক,

আইওটি এর পূর্ণরূপ হলোঃInternet of things. 

আইওটি হলো এমন একটা নেটওয়ার্ক যেখানে ভৌত জিনিসপত্র, যেমনঃ বাসাবাড়ির আসবাপত্র, চলাচলের জন্য যানবাহন, কৃষি কাজের জন্য যন্ত্রপাতি ইত্যাদি একটি সিস্টেমের মধ্যে কানেক্টেড থাকে। আপনারা হয়তো ইতিমধ্যে অনেকেই আই ও টি সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে গিয়েছেন। আবার অনেকেই বিস্তারিত কিছু তথ্য জানার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে আমি এ লিখাটি একদম নতুনদের উদ্দেশ্যে লিখছি। তাহলে চলুন জেনে আসি আই ও টি সম্পর্কে প্রাথমিক কিছু তথ্য-

IoT কীভাবে কাজ করে?

আই ও টি শব্দটি প্রথম উচ্চারিত হয় ১৯৯৯ সালে। এছাড়া ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আই ও টি নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা চলছে। বাংলাদেশে যদিও এ সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য জানা যায় নি। তবে খুব শ্রীঘই জানতে পারা যাবে বলে আশা করা যায়। এখন আমরা জানবো যে এই আই ও টি সিস্টেমটি কীভাবে কাজ করবে?

একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি ক্লিয়ার করা যাক, ধরুন আপনি একটি জায়গায় ঘুরতে গিয়েছেন, ঘুরে আসার পথে আপনার পকেটে রাখা সেলফোনটি আপনার বাসায় ফোন করল। হ্যালো বাসা? বস (আপনি) বাসায় আসছে। ঠিক তখনই বাসা কি করল জানেন? ঘরে রাখা সকল আসবাপত্রকে বলে দিল যে বস বাসায় আসছে। যেমনঃ চেয়ার, টেবিল, দরজা, জানালা ইত্যাদি। তখন জানালা আবার ঘরকে ঠাণ্ডা রাখার জন্য খুলে দিল তার পারলা। অন্যদিকে; চলতে থাকা ফ্যান, লাইট, এসিগুলোও অফ হয়ে গেল। ভাবছেন এগুলো কীভাবে সম্ভব? হ্যাঁ সবই সম্ভব। তারপর বস ২০ মিনিট পরে বাসার গেটের সামনে এসে হাজির। বস গেট খুলেই দেখলেন কেউ যেন তার বাগানে পানি দিচ্ছে, কিচ্ছুক্ষণ পরে আবার পানি দেওয়া বন্ধও হয়ে গেল। ঘরে ঢুকবে এমন সময়ে দরজার সামনে দাঁড়াতেই দরজা খুলে গেল। ঘরে ঢুকেই বাসার মালিক (বস) একটু শীতল অনুভব করলেন। কেনো বলুন তো? ঐ যে জানালা খোলা আছে এজন্য ঘরও শীতল রয়েছে। এসব কিন্তু কোনো ব্যক্তির কাজ না। এই প্রক্রিয়াটিই হচ্ছে ইন্টারনেট অফ থিংস। এভাবেই কাজ করে আই ও টি। যা বর্তমান প্রযুক্তিতে এনেছে এক নতুন ধরনের পরিবর্তন।

আই ও টি এর সুবিধাঃ

আই ও টি হলো এক ধরনের ইন্টারনেট কানেকটেড নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্ক কিন্তু কোনো ব্যক্তির সাথে ডিভাইস বা ডিভাইসের সাথে ব্যক্তির নয়। এই নেটওয়ার্ক হলো ডিভাইস টু ডিভাইস। আপনি এখন ভাবছেন যে, এক ডিভাইস কীভাবে অন্য আরেকটি ডিভাইসের সাথে কথা বলতে পারে? এটা সম্ভব না? হ্যাঁ, বর্তমান প্রযুক্তিতে এটা ও সম্ভব। চলুন তাহলে এ বিষয়টি ও ক্লিয়ার করা যাক। ডিভাইসের সাথে ডিভাইস কানেক্ট করতে বা কথা বলতে প্রথমে যেটি প্রয়োজন তা হলো ফিলিংস/সেন্স। আবার সেন্সের জন্য দরকার সেন্সর। তারপর কমিউনিকেশন পাওয়ারের প্রয়োজন কানেক্টিভিটির (ইন্টারনেট সংযোগ) জন্য। তারপর তৃতীয়ত যন্ত্রপাতির ভাষা তো আপনারা বা আমি কেউই বুঝবো না। তাই যন্ত্রপাতির ভাষা বোঝার জন্য প্রয়োজন একটি ইন্টারপ্রেটার, এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে ইন্টারপ্রেটার আবার কি? ইন্টারপ্রেটার হচ্ছে কোনো ল্যাগুয়েজকে ট্রান্সলেট করে আমরা বুঝতে পারি এমন ল্যাগুয়েজে রূপান্তরের একটি প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে ইন্টারপ্রেটর যে কাজটি করে তা হলো উক্ত ডিভাইসের ভাষাকে আমাদের নিজের ভাষাই রূপান্তর করতে সহায়তা করে। আবার এর জন্য দরকার একটি সফটওয়্যার। এই যে সিস্টেমটা তা সম্পূর্ণ হলেই একটি ডিভাইস অন্য আরেকটি ডিভাইসের সাথে সংযোগ করতে বা কথা বলতে পারবে এবং তারা বিভিন্ন ধরনের ডাটা একে অপরের সাথে শেয়ার করতে পারবে এবং সেই ডাটা অ্যানালাইসিস করে একটি অর্থপূর্ণ তথ্য বের করতে পারবে যা কোনো একটি ভালো কাজে আমরা ব্যবহার করতে পারব। যেমনঃ ইতোপূর্বে আমরা যেসব যন্ত্রপাতি ফ্যান, লাইট, বাগানে পানি দেওয়া এগুলো একে অপরের সাথে কথা বলতে পারে বলেই এই কাজটা করা সম্ভব হয়েছে। আর এটাই হচ্ছে আই ও টি।

এখন আই ও টি আমাদের কি কি কাজে লাগতে পারে? আই ও টি আমাদের দৈনন্দিন কাজে অনেক রকমভাবে সাহায্য করে থাকে। প্রথমত, স্মার্ট হোম দ্বিতীয়ত ট্টাফিক কন্ট্রোল, তৃতীয়ত হেলথ কেয়ার, এছাড়াও পাওয়ার সেভ এর দিক দিয়ে আই ও টি আমাদের অনেকটা সাহায্য করে থাকে।

আই ও টি এর অসুবিধাঃ

আই ও টি ডিভাইসের সাহায্যে আমরা বিভিন্ন ধরনের সহায়তামূলক কাজ করে থাকলেও এই ডিভাইসের বেশ কিছু অসুবিধা ও রয়েছে। যেমনঃ আমাদের দেশে যেহেতু টেকনোলজিস্ট লোকজনের সংখ্যা খুব কম সেহেতু তাদের কাছে এই ডিভাইসটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল মনে হতে পারে। এজন্য আমাদের প্রয়োজন সকলকে এই বিষয়ে যতুটুকু সম্ভব জানানোর বা বোঝানোর চেষ্টা করা। অন্যদিকে ডিভাইস টু ডিভাইস কানেকশন দিতে যে সকল টুলসের দরকার তা আমাদের দেশে অত্যন্ত নগণ্য অথবা নেই বললেই চলে। সেন্সর নামক ডিভাইস যদিও আছে তবুও ব্যবহার সীমিত। আবার কানেকশনের কথা বলতে গেলে তো একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়বে এই আই ও টি ডিভাইসের কার্যক্রম। কারণ আমাদের দেশে 4G নেটওয়ার্ক চালু থাকলে ও কোনো কোনো জায়গায় 2g নেটওয়ার্ক ও পাওয়া যায় না অনেক সময়। এটা একটা বড় সমস্যা আমাদের দেশের। আশা করা যায় আগামীতে এ ধরনের সমস্যা থাকবে না এবং আমরা সবাই সকল সমস্যাকে দূরে রেখে নতুন এক প্রযুক্তিতে অংশগ্রহণ করব।

উপরোক্ত বিষয়টি পছন্দ হলে আমাকে ফলো করতে পারেন। চাইলে বন্ধু হতে পারেন।

Level 3

আমি Tech Talk Everyday। Computer Operator and Web Designer, Praxis Garments Ltd., Mymensingh। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 17 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 8 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

    ধন্যবাদ । আশা করি আমাকে ফলো করে পাশে থাকবেন । আপনারা পাশে থাকলে আমি উৎসাহ পাবো । আর ভালো ভালো টিউন লিখতে আগ্রহী হবো ।