ঈদ মানেই আনন্দ কারো কারো কাছে ঈদ মানেই ঈদি/সালামি

ঈদ মানেই আনন্দ কারো কারো কাছে ঈদ মানেই ঈদি/সালামি। ছোটদের ঈদি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। ঈদির পরিবর্তে তাদের আদর ও দোয়া করাই শ্রেয়। অল্প বয়সে ছোটদের বেশি অর্থ পাওয়া শুভকর না হয়ে বরং তাদের মনে লোভাতুর মানসিকতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই সচেতন হোন!

ঈদে প্রতি বছরই আমরা দলবেঁধে বেড়াই। প্রতি ঘরের গৃহকর্তা/গৃহকর্তার স্ত্রীর কাছে বায়না ধরতাম ঈদি দেওয়ার জন্যে। সাথে দর কষাকষিও হতো কত দিবে। কম দিলে এবং ঈদি না দিলে বাজে মন্তব্য করতাম। এমন কি নাস্তা খাওয়ার অনুরোধ জানালে ফিরিয়ে দিয়ে বলতাম নাস্তা খাবো না আমাদের ঈদি দিলেই পেট ভরে যাবে। আমাদের এই রকম ঈদি চাওয়া কিন্তু আর ঈদির পর্যায়ে থাকে না সেটা হয়ে যায় বাড়াবাড়ি।

আমাদের সমাজের সবাই স্বচ্ছল না। আমরা একটা ঘরে গেলাম সালাম করতে এবং ঈদি নিতে। যে মাত্রই গৃহকর্তা টের পেলেন যে আমরা এসেছি তিনি স্ত্রী কে ইশারায় বলে দিলেন আমাদের কে তিনি নাই বলার জন্যে। এভাবে আমরা ঈদি চাইলে অনেকেই লজ্জাবোধে দিয়ে দেন।

ছোট বেলায় আমরা ব্যাঙের গল্প পড়েছি। ছোট বাচ্চারা নর্দমায় ঢিল ছুড়ে মারছিলো। হঠাৎ একটি বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যাঙ বাচ্চাদের দিকে ফেল ফেল করে তাকিয়ে বলল তোমরা ঢিল কেন ছুড়ছো? উত্তরে আমরা তো মজা করে খেলছি। প্রতুত্ত্যরে তোমাদের জন্যে যেটা খেলা আমাদের জন্যে সেটা মৃত্যু। তদ্রূপ আমাদের জন্যে যেটা ঈদি অনেক পরিবারের কাছে সেটা আর্থিক টানাপোড়নের কারন। অন্যের পরিবারে টানাপোড়ন সৃষ্টি করে ঈদি নেওয়া আমাদের জন্যে কি কল্যাণকর হবে? না কখনো নই যদি আমরা বুঝতাম।

এরকমই আমরা না বুঝে বাবার কাছে বায়না ধরতাম দামি কাপড় কিনে দিতে হবে আফমি প্লাজা, সানমার না হয় শফিং কমপ্লেক্স থেকে। যাতে করে ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে জাতে উঠতে পারি Now I am in Afmi Plaza with my sweet Father. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাবাকে যতটা সুইট বলছি বাস্তবে বাবা-মায়ের সাথে আমরা অসামাজিক আচরনই করি। এতো ফুটানি করে কিংবা এতো লাইক পেয়ে কি হবে? আমাদের অবস্থার তো কোন উন্নতি হচ্ছে না। সম্ভাবনাময় তরুনরা এখন ভার্চুয়াল ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বুদ হয়ে আছে ফলে মা-বাবাকে অনুভব করার সময়ই পায়না।

শেষমেষ বাবা সন্তানের আবদার রাখেন। কিন্তু বাবার পকেটের দিকে কখনো তাকানো হয়নি এমনকি বাবা শপিং করেছেন কিনা তার খোজও না। ঈদের দিন দেখেও না দেখার ভান করি মা-বাবা দুজনই পুরানো কাপড় দিয়ে ঈদ করছেন। এই কথা গুলো মনে পড়লে যাদের মা-বাবা দুজনই বেচে নেয় তাদের চোখে জল গড়িয়ে পড়বে। তেমনই একটি ঘটনা.

লকডাউন। জরুরী শিপমেন্টের কারনে অফিস করতে হয়। কিট আর স্বাস্থ্যবিধি শরীরে করোনা অনুপ্রবেশ না করার নিশ্চয়তা প্রদান করলেও জীবনের নিশ্চয়তা কে দিতে পারেন কে বা জীবনকে রঙ্গের ছটায় রঙ্গিন করতে পারেন! নিঃসন্দেহে বিশ্ব নির্মাতা।

শিপমেন্টের গুডস মালবাহী গাড়ীতে তুলে দিয়ে বাসার দিকে রওনা হতেই মধ্যরাত প্রায় ১২:১১ মি। অফিসের গাড়ী করে আশাকরিচ্যুত আর বেতন কেটে ফেলার হম্বিতম্বিতে তাদের মনোজগৎ এ যে ঝড় বইয়ে যায় তার কারনও আপনি, মনে পড়ে বৃদ্ধ বাবাকে লালনপালন করার নামে ঘুমন্ত অবস্থায় টিপ সই নিয়ে সম্পত্তি নিজের নামে করাই ভাইদের হক আপনি নষ্ট করেছেন, মনে পড়ে কি স্ত্রীর প্ররোচনায় মায়ের গায়ে হাত তুলতে কালক্ষেপণ করেননি।

শরীরে আর শক্তি কুলায় না। তিনি বসে পড়লেন একটি পুলের কিনারায়। পুলটির নাম জীবন পুল। কান্না আসলো সশব্দে কান্না ছাপা কান্না। চোখের পানি গড়িয়ে জামা ভিজে গেল। ভেতর থেকে শব্দ আসলো ক্ষমা করো প্রভু ক্ষমা করো প্রভু। মনে মনে তিনি শপথ করেছেন আজকের এই অন্ধকার রাত পেরিয়ে ভোর হলে আমার জীবন যাদের কাছে ঋনী তাদের কাছে ক্ষমা চাইবো।

নিদেনপক্ষে জীবনের সরলীকরণ অংকের হিসাব নিজেকেই কষতে হবে। নিজের কলুষিত অন্তরকে পরিশুদ্ধ করতে আগ্রহী হতে হবে। তেমনিভাবে আমরা না বুঝে মা-বাবা এবং না জানি কত মানুষের কষ্টের কারন হয়েছি। মা-বাবার ও উচিত সন্তানকে শুদ্ধাচার শিক্ষা দেওয়া। সন্তানকে স্মার্ট ফোন কিনে দিয়ে স্মার্ট না বানিয়ে এবং এমবি কার্ড কিনে না দিয়ে প্রতি মাসে তাকে একটি করে বই কিনে দিন। তখন সে শিখবে মা-বাবা কিভাবে আমাদের মাথায় ছাতা হয়ে নীরবে ছায়া দিচ্ছেন।

Level 0

আমি মোঃ আবু সুফিয়ান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস