ডিজিটাল ফটোগ্রাফি টিউটোরিয়াল (কমপোজিশন ও এক্সপোজার)

ভূমিকা - কমপোজিশন (Rule of thirds, Orientation, Background)- এক্সপোজার (Shutter Speeds, Aperture, ISO) - Contrasts and colours - শেষ কথা

আগের পর্ব:

১। ডিজিটাল ক্যামেরা টিউটোরিয়াল (বেসিক)
২। কাছ থেকে দেখা ডিজিটাল ক্যামেরা

ডিজিটাল ক্যামেরার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও ফিচার/ফাংশন সম্পর্কীত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ভালো ছবি তোলার কিছু বেসিক কলা-কৌশল নিয়ে এখানে আলোচনা করব। ক্যামেরার অটোমুড/সীনমুড দিয়ে বিভিন্ন টেকনিক্যাল সেটিংয়ের সিদ্ধান্ত ক্যামেরার উপর ছেড়ে দেয়া গেলেও গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় রয়েছে যা ফটোগ্রাফারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সঠিক সিদ্ধান্ত নির্ভর করে ফটোগ্রাফারের জ্ঞান, পছন্দ, রুচি, ফ্যান্টাসি ও অভিজ্ঞতার উপর। যেমন ফটোর কম্পোজ, দূরত্ব, এঙ্গেল, পজিশন, ভিউপয়েন্ট, পোস, ওরিয়েন্টেশন, ব্যাকগ্রাউন্ড ইত্যাদি। তাই সবক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে বলা কঠিন কোনটি সঠিক কোনটি ভুল।

কমপোজিশন

শট নেওয়ার জন্য কোন সাবজেক্ট নির্বাচন করার পর ভালো ফটোর জন্য আরো কিছু বিষয় নিয়ে ভাবতে হয়। যেমন সাবজেক্টটির উপরে, নিচে, ডানে, বামে কতটুকু এরিয়া ফ্রেমে আসবে, কোন পাশকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রাখা হবে, সাবজেক্টটর অবস্থান ফ্রেমের কোন জায়গায় হবে ইত্যাদি। কম্পোজ ফটোগ্রফির খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ ফটো তোলার পর গ্রাফিক প্রোগ্রামে এডিট করে কম্পোজের সেটিংগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। কম্পোজের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিম্নে আলোচনা করা হল:

১। ইমেজে সাবজেক্টের অবস্থান

আমরা সাধারণত সাবজেক্টকে ভিউ ফাইন্ডারে প্রদর্শিত ফ্রেমের মাঝখানে রেখে সরাসরি সামনের থেকে ফটো তুলতে অভ্যস্থ। এতে ছবি হয় দ্বিমাত্রিক এবং আকর্ষণহীন। শট নেওয়ার আগে ফোকাস এরিয়াকে আপাতঃদৃষ্টিতে অনুভূমিক (horizontally) ও খাড়াভাবে (vertically) তিন অংশে বিভক্ত করুন।

সাবজেক্টকে লাইনগুলোর যে কোন ইন্টারসেকশন পয়েন্টে পজিশন করুন। ফটোগ্রাফিতে এই টেকনিককে Rule of thirds বলে। কোন কোন ক্ষেত্রে সাবজেক্টকে ডায়েগোনালি সেটিং করলে ছবি সুন্দর হয় ও ছোট ফ্রেমে বড় সাবজেক্ট কভার করা যায়।
Rule of Third
সাবজেক্টকে লাইনগুলোর যে কোন ইন্টারসেকশন পয়েন্টে পজিশন করুন। ফটোগ্রাফিতে এই টেকনিককে Rule of thirds বলে। কোন কোন ক্ষেত্রে সাবজেক্টকে ডায়েগোনালি সেটিং করলে ছবি সুন্দর হয় ও ছোট ফ্রেমে বড় সাবজেক্ট কভার করা যায়।
Diagonal

২। সাবজেক্টের গুরুত্ব

আমরা ফটো তুলি সাধারণত কোন সাবজেক্টকে (ব্যক্তি, জীব, বস্তু) উদ্দ্যেশ্য করে। সুতরাং ফটোর অন্যান্য অংশের চেয়ে সাবজেক্টকে গুরুত্ব দিতে হবে বেশি। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সাবজেক্টের চতুর্পাশ্বে খালি জায়গা রাখার ও বড় ব্যাকগ্রাউন্ড নেওয়ার দরকার নাই। যতটুকু সম্ভব সাবজেক্টের কাছে এসে ছবি তুলুন। জুম দিয়ে ক্লোজআপ করার পরিবর্তে কাছে গিয়ে শট নেওয়া ভালো। কাছে যাওয়া সম্ভব না হলেই জুম ব্যবহার করুন। শট নেওয়ার আগে ভিউ ফাইন্ডারে ফোকাস ফ্রেমের চারটি কর্নারে দেখুন গুরুত্বপূর্ণ কিছু আছে কিনা। যদি না থাকে সাবজেক্টের আরো কাছে এসে ব্যাকগ্রাউন্ড ছোট করে সাবজেক্ট দিয়ে ফ্রেম কভার করুন।
Subject
দূর থেকে শট নেওয়ার কারণে বামপাশের ছবিতে মেয়েটির চেহারা পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে না। কাছে গিয়ে শট নেওয়ায় ডানপাশের ছবিতে মেয়েটির ছবি অনেক পরিষ্কার ও জীবন্ত, সেইসাথে ব্যাকগ্রাউন্ড যতটুকু এসেছে তাতেই বুঝা যাচ্ছে এটা সমূদ্র সৈকত।
Frame Cover
যখন কোন বিশেষ অনুভূতি, কোন ব্যাক্তির অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বা কোন বস্তুর অংশ-বিশেষের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে ছবি তুলবেন তখন সেই বিশেষ অনুভূতির বাহ্যিক প্রকাশ, অঙ্গ/অংশটুকু ক্লোজআপ করে পুরো ফ্রেম কভার করে শট নিন। এতে বিশেষ অনুভূতি/সৌন্দর্য ও ইন্টিমেসি শতভাগ ফুটে উঠবে।

৩। ফটোতে ব্যাকগ্রাউন্ড নির্বাচন

ব্যাকগ্রাউন্ড যেন সাবজেক্ট থেকে বেশি উজ্জল বা এমন কোন রংয়ের না হয় যা সাবজেক্টকে ম্রিয়মান করে দেয়। সাবজেক্ট ও ব্যাকগ্রাউন্ডকে এমনভাবে পজিশন করতে হবে যেন ফটোতে একটা ত্রিমাত্রিক এফেক্ট আসে। সাবজেক্ট ও ব্যাকগ্রাউন্ডের মধ্যে দুরত্ব বৃদ্ধি করে শুধু সাবজেক্টের উপর ফোকাস করে গুরুত্বহীন ব্যাকগ্রাউন্ডের আকর্ষণ কমিয়ে আনা যায়।
Background
বামপাশের ফটোতে ব্যাকগ্রাউন্ডে অপ্রত্যাশিত লোক ও মেয়েটির মাথার উপরে গাছটি ফটোর সৌন্দর্য নষ্ট করেছে। ডান পাশের নিচের ফটোতে এক্সপোজের সাহায্যে depth of field (amount of in-focus distance) এডজাস্ট করে শুধু সাবজেক্টকে ফোকাস করে ব্যাকগ্রাউন্ডকে অস্পষ্ট করা হয়েছে।

৪। সঠিক ওরিয়েন্টেশন

Orientation
সাধারণত সাবজেক্টের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ বা ব্যাকগ্রাউন্ডের উপর ভিত্তি করে ফটোর ওরিয়েন্টেশনের (Horizontal/Vertical) সিদ্ধান্ত নিতে হয় কোন কোন ক্ষেত্রে ফটো Horizontal ও Vertical উভয় ওরিয়েন্টেশনেই ভালো হতে পারে।

৫।Point of view

Viewpoint
কোন এঙ্গেল ও কোন পাশ থেকে শট নেবেন সেটাই ভিউপয়েন্ট। ফটোগ্রাফিতে ভিউপয়েন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিউপয়েন্ট পরিবর্তন করে ফটোকে আরো আকর্ষণীয় ও ত্রিমাত্রিক করা যায়। এছাড়া ব্যাকগ্রাউন্ডেও পরিবর্তন আনা যায়। সাবজেক্ট বা ক্যামেরা অথবা উভয়ের পজিশন পরিবর্তন করে বিভিন্ন ভিউপয়েন্ট সৃষ্টি করা সম্ভব।

৬। Photography Poses

Poses
ফটোগ্রাফিতে সাবজেক্টের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, মনোগত অনুভূতি, পারিপার্শিকতা ইত্যাদি প্রকাশের শারীরিক ভাষাকেই বলে পোস। সাবজেক্টের যথার্থ পোস সহকারে শট নিতে পারলে "ফটো কথা বলে"।
Poses-2

৭।Framing

ফ্রেমিং হচ্ছে সাবজেক্টকে ইমেজের জ্যামিতিক আকারের অন্য অংশের মধ্যে আবদ্ধ করা। এতে সাবজেক্টের আকর্ষণ বৃদ্ধি পায় এবং ফটোতে ত্রিমাত্রিক এফেক্ট ও গভীরত্ব বৃদ্ধি পায়।
Framing

এক্সপোজার

ফটোগ্রাফিতে "Exposure" বলতে ফিল্ম বা সিসিডি-তে কতটুকু আলো এসে পড়বে তাই বুঝায়। ফটোতে আলোর গুরুত্ব অপরিসীম। সুতরাং ভালো ও সুন্দর ফটো তুলতে হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আলোকে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল তথা এক্সপোজার সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।যদিও বিষয়টা কিছুটা টেকনিক্যাল ও জটিল।পাওয়ার এন্ড শ্যুট ডিজিটাল ক্যামেরায় অটোমুডে ক্যামেরা নিজেই Exposure সেটিং করে, তারপরেও এই বিষয়ে কিছুটা জ্ঞান থাকা ভালো। আর যদি এসএলআর ক্যামেরা হয় তবে অবশ্যই এ বিষয়ে জানতে হবে। আমরা যদি Exposure-কে একটি ত্রিভুজের সাথে তুলনা করি তবে ত্রিভুজটির তিনটি কোণ হচ্ছে: ISO, Aperture এবং Shutter Speed।
Triangle

Auto Exposure

এই অপশনে ক্যামেরা নিজেই এক্সপোজার সেটিং করে আগেই বলেছি, তবে অটো এক্সপোজারের কলা-কৌশল বুঝলে একে প্রত্যক্ষভাবে ম্যানিপোলেশন করা সম্ভব। সাধারণত বেশিরভাগ আধুনিক ডিজিটাল ক্যামেরা ফোকাস এরিয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে আলোর তথ্য সংগ্রহ করে (সেন্টার পজিশন থেকে বেশি তথ্য সংগ্রহ করে) সবগুলো তথ্যকে Average করে Exposure সেটিং করে। তথ্যগুলো সংগ্রহ করে শাটার বাটনকে অর্ধেক চাপ দেওয়ার মুহুর্তে। কোন ফটোকে অধিক আলোকিত করার জন্য ফটোর ফোকাস এরিয়া থেকে অধিক অন্ধকারময় আশেপাশের কোন জায়গা ভিউ ফাইন্ডারে সেন্টার ফোকাস করে শাটার বাটনকে অর্ধেক চাপ দিয়ে ধরে রাখুন। শাটার বাটনকে ঠিক ঐ জায়গায় স্থির রেখে ক্যামেরা মুভ করে যে জায়গায় ছবি তুলবেন সেটা ভি্উ ফাইন্ডারে ফ্রেম করুন। এবার শাটার বাটনের বাকী অংশটুকু চাপ দিয়ে শট নিন। যেহেতু ক্যামেরা তুলনামূলকভাবে অন্ধকার জায়গার তথ্যের ভিত্তিতে এক্সপোজার সেটিং করেছে সেহেতু আপনার ছবিটা নিয়ম থেকে কিছুটা বেশি আলোময় ও উজ্জল হবে। আবার কোন ছবির উজ্জল আলোকে কিছুটা কমাতে ঠিক উল্টোভাবে অটো এক্সপোজার ম্যানিপোলেশন করতে পারেন। পরীক্ষা করে দেখুন, টেকনিকটা হয়তো কাজে লাগতে পারে। অটোমুডে ফটো তোলার সময় ফোকাস এরিয়াতে লক্ষ্য রাখবেন যেন সব জায়গায় আলোর পরিমাণ প্রায় একই হয়। তদি একপাশে রোদ, মাঝখানে ছায়া আরেক পাশে অন্ধকার এধরনের জটিল হয়, তবে অটো মুডের অ্যাপারচার সেটিং সঠিক নাও হতে পারে।
Exposure

Manual Exposure

ম্যানুয়েল এক্সপোসার নিয়ে "ডিজিটাল ক্যামেরা টিয়টোরিয়েল" পর্বে কিছুটা আলোচনা করেছিলাম। এখানে আরো বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। Shutter Speed হচ্ছে শাটার বাটন চাপ দেওয়ার পর লেন্সের মাধ্যমে আলো প্রবেশের গোলাকার ছিদ্র বা জানালাটি কতোক্ষণ খোলা থাকবে, আর Apertures হচ্ছে আলো প্রবেশের গোলাকার জানালাটির সাইজ (ব্যাস) কত হবে তা নির্ধারণ করা।
Large aperture (জানালার সাইজ বড়) = small f number
Small aperture (জানালার সাইজ ছোট) = larger f number
Shutter Speed -এর সময়কে সেকেন্ডের ভগ্নাংশে প্রকাশ করা হয়।
সাধারণ সূর্যালোকিত দিনে ক্যামেরার ভি্উ ফাইন্ডার বা ডিসপ্লেতে যদি '125 16' বা '500 8' প্রদর্শিত হয় তার প্রথম সংখ্যার অর্থ হচ্ছে: Shutter Speed ১২৫ ভাগের ১ সেকেন্ড অথবা ৫০০ ভাগের ১ সেকেন্ড আর ২য় সংখ্যাটিও একটি ভগ্নাংশ যার অর্থ হচ্ছে লেন্সের ফোকাল লেন্থকে গোলাকার জানালার ব্যাস দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল হয় ১৬ (80mm/5mm = f16) অথবা ৮ (160mm/20mm = f8)।

১। Apertures

অ্যাপারচার তথা 'গোলাকার খোলা জানালা'র সাইজকে f/number দিয়ে প্রকাশ করা হয়। যেমন: f/2.8, f/4, f/5.6,f/8,f/22 ইত্যাদি।এই নাম্বারের সিরিজ নির্বাচনে প্রতি ধাপে ছোট সংখ্যার দিকে গেলে জানালার সাইজ দ্বিগুণ করে বড় হবে আর বড় সংখ্যার দিকে গেলে প্রতি ধাপে অর্ধেক করে ছোট হবে। উল্ল্যেখ্য, শাটার স্পীড তথা 'জানালা খোলা থাকার সময়সীমা' ½ s – ¼ s – 1/8 s – 1/15 s – 1/30 s – 1/60 s – 1/125 s – 1/250 s – 1/500 s প্রতি ধাপে দ্বিগুণ করে বাড়ে বা অর্ধেক করে কমে। সুতরাং যদি অ্যাপারচার ভ্যালু এক ধাপ পরিবর্তন করে জানালার সাইজ অর্ধেক ছোট করা হয় এবং সেইসাথে শাটার স্পীডের ভ্যালু এক ধাপ পরিবর্তন করে জানালাটি খোলা রাখার সময় দ্বিগুণ করা হয় তাহলে প্লাসে মাইনাসে মিলে আলোর এফেক্ট আগের মতই থাকবে। এটাই Aperture এবং Shutter Speed এর পারষ্পরিক সম্পর্ক।
এদের প্রয়োগ সম্পর্কে আলোচনা করার আগে আরেকটি জিনিস পরিষ্কার হওয়া দরকার - Depth of Field। ফটোগ্রাফীতে ডেফথ অফ ফিল্ড বলতে বুঝায় ছবির কতটুকু দূরত্ব বা পরমাণ ফোকাসের আওতায় আসবে তা নির্ধারণ করা। Large depth of field বলতে বুঝায় ছবির সাবজেক্ট ও সাবজেক্টের কাছের ও দূরের প্রা্য সবকিছুই ফোকাসে আসবে। এভাবে ছবির Depth of Field বাড়াতে হলে Aperture তথা 'গোলাকার খোলা জানালা'র সাইজ ছোট করতে হবে অর্থাৎ f/number বড় হবে।
Aperture
বাম পাশের ফুলের শট নেওয়া হয়েছে aperture f/2.8 দিয়ে, ফলাফল Small depth of field, শুধু ফুলটি ফোকাসের মধ্যে এসেছে, এর পেছনের কিছু আসে নাই। ডান পাশের শট নেওয়া হয়েছে aperture f/16 দিয়ে। ফলাফল Large depth of field, কাছের ও দূরের সবকিছুই ফোকাসের আওতায়। শুনতে কিছুটা অযৌক্তিক হলেও মনে রাখার চেষ্টা করুন:
Large Aperture = Large Hole = Low Number = Small Depth
Small Aperture = Small Hole = High Number = Large Depth
আমরা এখন বলতে পারি, Depth of Field নির্ভর করে দুটি বিষয়ের উপর: সাবেজক্ট থেকে ক্যামেরার দুরত্ব ও Aperture সেটিং।

২। Shutter Speed

আমরা জানি শাটার স্পীড ও অ্যাপারচার দুটোই আলোর পরিমান কমানো-বাড়ানোর টুলস। Aperture আলো প্রবেশের ছিদ্র ছোট-বড় করে আর Shutter Speed আলো প্রবেশের ছিদ্রটি অল্প-বেশি সময়ের জন্য খোলা রেখে আলোর পরিমান নিয়ন্ত্রন করে। সাবজেক্ট যেখানে গতিশীল সেখানে Aperture-এর পরিবর্তে Shutter Speed দিয়ে আলোর পরিমান নিয়ন্ত্রন করা হয়। সাধারণত চলন্ত গাড়ি, খেলাধুলা, শিশুদের দৌড়-ঝাপের শট fast shutter speed-এ নিলে ফটো ভালো হয়।
Shutter Speed
সাইকেল চালানো অবস্থায় বালকটির ফটো দ্রুত শাটার স্পীড সেটিং ও সাইকেলকে টার্গেট করে ক্যামেরা মুভ করে উঠানো হয়েছে। তাই ব্যাকগ্রাউন্ড ঝাপসা হয়েছে। সেটাই ভালো, ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে অপ্রত্যাশিত কিছু এসে সাবজেক্টের আকর্ষণ নষ্ট করার সম্ভাবনা নাই। দ্রুত ও ধীর গতির শাটার স্পীডের পার্থক্য বুঝার জন্য নিচের ছবিটি দেখুন:
Shutter Speer 2
একই ফোয়ারার দুটি ছবি। বাম পাশের ছবিটি দ্রুত শাটার স্পীডে শট নেওয়া - ৫০০ ভাগের ১ সেকেন্ডের জন্য লেন্সের মধ্য দিয়ে সেন্সরে আলো প্রবেশের ছিদ্রটি খোলা ছিল। পানির প্রতিটি বিন্দু বাতাসে ভাসমান অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। ডান পাশের ছবিটি স্লো শাটার স্পীডে (৩০ ভাগের ১ সেকেন্ড) তোলা হয়েছে। উল্লেখ্য, স্লো শাটার স্পীডের সময় ক্যামেরা ট্রিপড বা কোন কিছুর উপর রেখে শট নেওয়া ভাল। অন্যথায় হাত কেঁপে ছবি ঝাপসা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

৩। ISO (Sensitivity)

ডিজিটাল ক্যামেরায় CCD বা CMOS সেনসর কতখানি সংবেদনশীল বা আলোর স্পর্শে কত তাড়াতাড়ি রিয়্যাক্ট করবে তা ISO সংখ্যা দিয়ে নির্ধারণ করা হয়। Low ISO Rating -এর অর্থ এটা কম সংবেদনশীল অর্থাৎ যথার্থ এক্সপোজারের জন্য বেশি আলোর প্রয়োজন হবে। High ISO Rating -এর বেলায় হবে ঠিক উল্টো। সাধারণত ISO 100 - ISO 400 ব্যবহার হয় বেশি। ISO Rating যত বেশি হবে ক্যামেরা কম আলোর ছবি তত বেশি ভালো তুলতে পারবে। তা ছাড়া দ্রুত শাটার স্পীডে শট নেওয়ার সময়ও ISO Rating বেশি রাখতে হয়। High ISO Rating -এর নেতিবাচক দিক হচ্ছে ফটোতে কিছুটা 'noise' -এর সৃষ্টি হয়।
ISO
একই ফটো - তিন রকমের ISO (100, 400, 1600) দিয়ে শট নেওয়া।

৪। Contrasts and colours

Contrast বলতে কোন ছবির brightest এবং darkest রংয়ের ঘণত্বের পার্থক্যকে বুঝায়।
Contrast
আলোর উৎস, পরিমাণ, বিন্যাস এবং সঠিক এক্সপোজের সমন্বয়েই সম্ভব Balance contrast and color।

শেষ কথা

প্রয়োজন ছাড়া ম্যানুয়েল এক্সপোজার ব্যবহার না করাই ভালো। লেটেস্ট মডেলের ক্যামেরা অটোমুডে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সঠিক এক্সপোজ করে। যদি ফটো আপনার মনের মত না হয় তখন এক্সপেরিমেন্ট করে দেখতে পারেন। এসএলআর ক্যামেরা হলে কথাই নেই, ইদানিং লেটেস্ট কমপ্যাক্ট ক্যামেরাতেও আংশিক ম্যানুয়েল এক্সপোজারের সুবিধা থাকে। কোন নির্দিষ্ট ISO, Aperture এবং Shutter Speed-ভ্যালুতে আপনার ক্যামেরাতে একটি ফটো যে কোয়ালিটির উঠেছে, আরেকজনের ক্যামেরায় একই এক্সপোজার ভ্যালুতে ফটোটি একই কোয়ালিটির হবে তেমন কোন গ্যারান্টি নাই। ক্যামেরার মডেল, ফিচার ও লেন্সের উপর ভিত্তি করে এক্সপোজার ভ্যালু একই হলেও ফটোর কোয়ালিটির তারতম্য হতে পারে।
আশা করি ক্যামেরা ও ফটোগ্রাফির বেসিক কলা-কৌশল নিয়ে লেখা আমার এই তিনটি পর্ব ক্যামেরার নতুন ও সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাজে আসবে।

------------------------------------------------------
তথ্য ও ছবিসূত্র:
Understanding Exposure by Bryan Peterson
http://digital-photography-school.com
http://www.geofflawrence.com/index.htm
40 Digital Photography Techniques by John Kim
ইন্টারনেট ও পত্র-পত্রিকা

Level 0

আমি জোবাইর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 11 টি টিউন ও 67 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

এক্কেরে ফাটিয়ে দিয়েছেন ভাই।
অসাধারন্সসসসসসসসসসসসসসসসসসসসসসস

আমার দেখা অন্যতম সেরা টিউন।

Level New

খুব ভাল তবে আমি ক্যামেরার সব গুলো mode সম্পরকে জানতে চাই

ওরে …….. আরেকজন ফটো গীক পাওয়া গেল

ai rokom aro tune chai

ভাই আপনার সাথে আমার নামের কিছুটা মিল আছে তবে জ্ঞানের অনেক পার্থক্য।
আপনার কাছে অনেক কিছু শিখার আছে।
আশা করি আমাদের যে সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবেন না। চালিয়ে যাবেন।
ধন্যবাদ।

    চমৎকার মন্তব্য ও কড়া অনুরোধ! ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

ওয়ান থার্টি সিক্স এবং ওয়ান টেন নামে দু’ধরণের ক্যামেরা প্রচলিত ছিল একসময়। সাদা-কালো ফিল্ম ছিল। ৪০ টাকায় বিক্রি হতো। কিন্তু অফিসে/ বাসায় ১২-১৬ ঘন্টার কম্পিউটার ইউজিং- চোখ খেয়ে নিয়েছে যাদের, নিখুঁত ফটোগ্রাফী তাদের পক্ষে আর কোনদিনই সম্ভব নয়। তাই চকচকে চোখের তরুণ কম্পিউটার ইউজারদের বলছি, যতনে রেখো তোমাদের নয়ন।

ওরে ওরে এক্কেরে ফটো গিক টিউন হইছে।
আমার Nikon D40 টা দিয়া আর হচ্ছে না।
ভাবছি ভালো কিছু কিনবো।

ছবি তোলার পর্ব বুঝলাম এবার এডিট করার পালা ঘুরে দেখুন বাংলা এবং ইংরেজী ভার্সনে।
http://nextbarisal.com/english/graphic_design.php

Level 0

ফটোগ্রাফি নিয়ে তথ্যবহুল লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আশাকরি সামনে আপনার কাছথেকে এরকম আরো লেখা পাব।

ধন্যবাদ

খুব সুন্দর, আপনাকে ধন্যবাদ।

ফাটাফাটি একটা টিউন করছেন। এ টিউনটা দেখলে অনেকেরই ফটোগ্রাফিতে আগ্রহ জন্মাবে।

বস, আমি আপনার এলবাম গুলো দেখতে চাই। আমি কি আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ড হতে পারি?

হুমমমম
ভাল লিখেছেন।

আপনার cam এর model কি..জানালে খুশি হতাম…Thanks for nice & important tunes

Level New

ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

এই টিউনটির pdf ফাইল চাই।

    আমার লেখা ‘বেসিক ও ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স’ (অনুপম প্রকাশনী) বইটি পড়লে ডিজিটাল ক্যামেরাসহ আরো অনেক বিষয়ে জানা যাবে।
    http://rokomari.com/book/53805
    মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, রিফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, ডিজিটাল ক্যামেরা, কম্পিউটার, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, কুকার, ব্লেনডার ইত্যাদি এখন আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যাঁরা জানতে ইচ্ছুক তাঁদের সুবিধার্থে এই বইয়ে সহজ ভাষায় বহুল ব্যবহৃত প্রযুক্তিগত উপকরণগুলোর মৌলিক ধারণা দেওয়া হয়েছে এবং এইসব প্রযুক্তিনির্ভর পণ্যের সুবিধা-অসুবিধা, বিভিন্ন ফিচার-ফাংশন, কেনার আগে যেসব বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে, ব্যবহারের নিয়ম ও টিপস ইত্যাদি নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।