গ্লাডিওলাসের উৎপাদন প্রযুক্তি

আবহাওয়া

গ্লাডিওলাসের সঠিক বৃদ্ধির জন্য আর্দ্র ও ঠান্ডা আবহাওয়া দরকার। ১৫-২০ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় গাছ ভালভাবে বৃদ্ধি পায়। এই ফুল চাষের জন্য পূর্ণ সূর্যোলোক প্রয়োজন। ছায়ার এই ফুল ভাল হয়না। করম রোপণ এবং স্পাইক বের হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে মাটিতে আর্দ্রতার ঘাটতি হলে ফলন হ্রাস পায়।

মাটি

যে কোন ধরনের মাটিতে এই ফুল চাষ করা যায়। তবে বেলে দোআঁশ মাটি উত্তম।

রোপন সময়
কার্তিক (মধ্য-অক্টোবর থেকে মধ্য-নভেম্বর)

রোপণ পদ্ধতি
রোগমুক্ত বড় (৩০+/-০.৫গ্রাম। ) মাঝারি (২০+/- ০.৫ গ্রাম) ওজনের ৩.৫-৪.৫ সেমি ব্যাসযুক্ত করম ৬-৯ সেমি গভীরতার রোপন করতে হবে। করম অবশ্যই সুপ্তাবস্থা মুক্ত হতে হবে। সারি থেকে সারি দূরত্ব ৩০ সেমি এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২৫ সেমি হতে হবে। তবে বাণিজ্যক ভিত্তিতে উৎপাদনের ক্ষেত্রে ১৫*২০ সেমি দূরত্বে রোপণ করা যেতে পারে।

সার প্রয়োগ
হেক্টরপ্রতি ১০ টন পচা গোবর সার, ২০০ কেজি ইউরিয়া, ২২৫ কেজি টিএসপি এবং ১৯০ কেজি এমপি প্রয়োগ করতে হবে। গোবর, টিএসপি ও এমপি জমি তৈরির সময় ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সারকে সমান দুই ভাগে ভাগ করে ৪ পাতা বের হওয়ার পর অর্ধেক এবং বাকি অর্ধেক ৭ পাতা বের হওয়ার পর অর্থাৎ স্পাইক বের হওয়ার মুহূর্তে সারির দু’পাশে ৫ সেমি গভীরে পার্শ্ব প্রয়োগ করতে হবে।

সেচ ও পানি নিষ্কাশন

উত্তম ফুলের জন্য মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রস থাকতে হবে। এজন্য প্রয়োজনমত সেচ দিতে হবে। সাধারণভাবে করম মাটিতে লাগানোর পর হালাক সেচ দিতে হবে। যার ফলে করমগুলি মাটিতে লেগে যায়। পরবর্তীতে আবহাওয়ার অবস্থা বুঝে ১০-১৫ দিন অমত্মর অমত্মর হালকা সেচ দিতে হবে।

মালচিং ও মাটি উঠানো
গ্লাডিওলাস ফুল চাষের একটি প্রয়োজনীয় পরিচর্যা হচ্ছে মাটি উঠনো। গাছের ৩-৫ পাতা পর্যায় একবার; এবং প্রয়োজনবোধে ৭ পাতা বের হওয়ার পর অর্থাৎ স্পাইক বের হবার সময় গাছের গোড়ার দু’পাশে থেকে মাটি তুলে দিতে হবে। মাটি তুলে দিলে জমিতে পর্যপ্ত রস থাকে এবং বাতাসে গাছ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। সেচ দেওয়ার পর করম মাটির উপরে উঠে আসলে পাশ থেকে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

gladiolus

আগাছা দমন
ভাল ফলন পেতে হলে জমিকে অবশ্যই আগাছমুক্ত রাখতে হবে। আগাছামুক্ত করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে অঙ্কুরোদগমে কোন ক্ষতি না হয়।

স্টেকিং

বর্ষাকালে বৃষ্টিতে পড়ে যাওয়া থেকে গাছ রক্ষার জন্য স্টেকিং প্রয়োজন। সারিতে ২ মিটার দূরে দূরে বাঁশের কাঠি পুঁতে দিতে হবে। তবে গাছ ঘন করে রোপণ করলে স্টেকিং দরকার নাও হতে পারে।

ফুল কাটা
কর্‌ম লাগানোর পর জাতভেদে ৭৫-৯০ দিনের মধ্যে গাছে ফুল আসে। স্পাইকের নিচ দিকে ১-২ টি ফ্লোরেটে রং দেখা দিলেই স্পাইক কাটার উপযুক্ত সময়। তবে খোয়াল রাখতে হবে যাতে ফুলগুলি ফুটে না যায় এবং শক্ত থাকে।

কর্‌ম তোলা ও সংরক্ষণ

ফুল কাটার ৬-৮ সপ্তাহ পরে করম উঠনোর উপযোগী হয়। কর্‌ম পরিষ্কার করে ছায়াতে ২-৩ দিন শুকিয়ে বিভিন্ন আকার অনুসারে বাছাই করতে হবে। সুস্থ কর্‌ম ও কর্‌মের অনেক দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা সম্বব। ফুল কাটার পরে ৯০-১০৫ দিনের মধ্যে ভাল মানের করম পাওয়া যায়।

ফলন

বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় ২৪ টন ফুল বা ৫ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকার স্টিক পাওয়া যায়। একই ভাবে প্রায় ১০ টন উন্নত করম পাওয়া যায়।

Level 1

আমি মাসরুর মুয়াম্মার। Chief Administrative Officer, Quick Supply BD, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস