ম্যালওয়্যার সম্মন্ধে সাধারন কিছু কথপোকথন

Malicious Software এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল Malware যার বাংলা অর্থ দাড়ায় "বিদ্ধষপরায়ন প্রোগ্রাম"। আগেই বলা হয়েছে আমরদের কম্পিউটার এ ব্যবহৃত দৃশ্যমান এবং অদৃশ্যত চলমান সকল কিছুই প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার। যে সকল সফটওয়্যার আমাদের কাজে বাধার সৃষ্টি করে বা আমাদের সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্থ করে তাদের বলা হয় ম্যালওয়্যার।আরেকটু ভালভাবে বললে এইভাবে বলা যায় ম্যালওয়্যার হল এমন এক ধরনের প্রোগ্রাম যাকে ডিজাইন করা হয় এমন ভাবে যাতে সে গোপনীয়তার সাথে কম্পিউটার এর সিস্টেমকে Access করতে পারে ব্যবহারকারীর অনুমতি ব্যাতিত। প্রফেশনালদের মতে এমন কিছু প্রোগ্রাম যা আমাদের কাজের গতিকে মন্থর করে, এবং আমাদের অনুমতি ব্যতিত তাদের কাজ করে থাকে এমন প্রোগ্রাম কোডিং বিষেশ হল ম্যালওয়্যার।

এর উদ্দেশ্য

শুরুরদিকের প্রোগ্রাম গুলো যাদের মধ্যে ইন্টারনেটের ওয়ার্ম এবং কিছু MS-DOS বেজড ভাইরাস ও রয়েছে এগুলো তৈরী হত নিন্তান্তই দুষ্টামী করার জন্য। একটি উধারন দিতে হলে এভাবে বলা যায় –
আপনার এক বন্ধু মোটামুটি ভাল ব্যাচ প্রোগ্রাম করতে পারে। সে হঠাৎ একদিন আপনাকে একটি ফাইল দিল যা চালু করার পর মেসেজ আসত “আপনার নাম কী?” আপনি আপনার নাম টাইপ করলে তা পরবতী মেসেজ সো করে বলত “হ্যা, আপনিই সেই বোকা।”
উপরের প্রোগ্রামটি কিন্তু একটি ব্যাচ ফাইলের সাহায্যে করা হয়েছে। যার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল আপনার সাথে মজা করার। কিন্তু আপনি এখন একটি উধাহরন দেখুন-

আপনার এক বন্ধু নতুন নতুন ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। তার কাছে পুরো ইন্টারনেট জগৎটাই বিশ্বয়কর। নতুন নতুন পেজ ব্রাউজ করছে আর আশ্চর্য বোধ করছে। হঠাৎ তার সামনে একটা মেসজ আসল “আপনার কম্পিউটার এ ৮৮ টা ভাইরাস পাওয়া গেছে। এউ সফটওয়্যার ডাওনলোড করে স্ক্যান করলে আপনার সকল সমস্যা দূর হয়ে যাবে।” আপনার বন্ধু না বুঝে ঐ সফটওয়্যারটি ডাওনলোড করে তার কম্পিউটার এ ইন্সটল করল। তার পর তথাকথিত ঐ সফটওয়্যারটি তার ডাটাবেজ ডাওনলোড করার নাম করে নেট খেকে কিছু ফাইল নামানো শুরু করল। তারপর একটি রির্স্টার্ট চাইল। আপনার বন্ধু তাই করল। এই বার শুরু হল তার ভোগান্তির পালা। কম্পিউটার চালু হয়ে ডেক্সটপ পর্যন্ত আসে এবং তা আবার রির্স্টার্ট করে। এভাবে চলতে থাকল। এবং কোন উপায় না দখে সে আপনার সরনাপন্ন হল।

এবারের ঘটনার সাথে কী আগের ঘটনার কোন মিল খুজে পাচ্ছেন? প্রথমটি ছিল শুধুমাত্র আপনার সাথে আপনার বন্ধুর দুষ্টামি আর দ্বিতীয়টি হল আপনার সাথে দুষ্টামী এবং আপনার পিসির বারোটা বাজানোর সহজ পদ্ধতি।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে যে প্রোগ্রামার এই ধরনের প্রোগ্রাম রচনা করেন তারা নিজেরাও জানেন না তারা কতটুকু ক্ষতিকর প্রোগ্রাম তৈরী করছেন। অনেক সময় এত বড় আকারে ক্ষতি সাধন হয় যে তাকে Recover করার পদ্ধতি আর ঐ প্রোগ্রামার এর হাতে থাকে না। আবার অনেক প্রোগ্রামার দেখতে চান তার তৈরী করা ভাইরাস কতটুকু ছড়িয়ে ক্ষতি করতে পারে। ১৯৯৯ সালের Melissa virus তারই একটি উধাহরন।
আবার ইন্টারনেট এর কল্যানে বিশেষ করে ব্রডবেন্ড ইন্টারনেট এর অবদানে Malicious Software কে লাভের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন কিছু কিছু প্রোগ্রাম আছে যা ইন্সটল করার পর কিছুক্ষন পর পর নতুন নতুন Add দেখতে বাধ্য করে। এদের ই আরেক রূপ হল স্পাম ভাইরাস। যা ইউজার এর ইমেইল এড্রেস এবং এড্রেস বুক ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের মেইল বিভিন্ন এড্রেস এ পাঠাতে থাকে। এদের আরেকটি হল Spyware, যা ব্যবহার কারীর ওয়েব ব্রাউজিং কে মনিটর করে, বিভিন্ন ধরনের চটকদার add প্রদান করে, তাদের কে বার বার রিকমান্ড করে ঐ প্রোগ্রামার এর তৈরী করা বিভিন্ন সফটওয়্যার কিনতে। তবে এরা ভাইরাস এর মত নিজেদের কপি তৈরী করে না। তারা খুব সুচারু ভাবে নিজেকে অন্যান্য প্রোগ্রাম এর সাথে ইন্সটল করে। এবং সময় হলে বিভিন্ন তথ্য পাচার করে থাকে।

ম্যালওয়্যার এর সংক্রামন : ভাইরাস এবং ওয়ার্মস

ম্যালওয়্যার এর সবচেয়ে পরিচিত রূপ হল “ভাইরাস” এবং “ওয়ার্ম”। কম্পিউটার এর ভাইরাস এর সংগা দিতে হলে এমন ভাবে বলা যায় –

“এক ধরনের Executable সফটওয়্যার যা Execute করার পর বিস্তৃত হয় অন্যান্য Executable ফাইল এর মাঝে। এর মধ্যে অবস্থিত payload পদ্ধতি কে কাজে লাগিয়ে আরো অন্যান্য উদ্দেশ্য সম্পন্ন করে থাকে”

ওয়র্মের ক্ষেত্রে বলতে হলে এমন ভাবে বলা যায়-

“এটি এমন একটি প্রোগ্রাম যা সক্রিয় ভাবে নেটওয়ার্ক বা মিডিয়া ব্যবহার করে অন্যান্য কম্পিউটার কে সংক্রামিত করে তোলে। এটি ও তার মাঝে payload পদ্ধতি বহন এবং ব্যবহার করে।”

উপরের সংগা গুলো আরো একবার ভাল করে পড়ুন এবং একটু ভালভাবে খেয়াল করুন – ভাইরাস এর সংক্রামন ঘটাতে হলে এতে একটু হাত দিতে হয় নতুবা এটি একাই নিজে নিজে বিস্তার লাভ করতে পারে না কিন্তু ওয়ার্মের ব্যপারে তা একটু ভিন্ন। কারন ওয়ার্ম নিজে নিজেই নিজের বিস্তার লাভ করে, এর বিস্তৃতিতে হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয় না। এইদিক হতে ভাল করে অবলোকন করলে দেখা যায় যে সংক্রামন করার জন্য ইমেইল, ডকুমেন্টকে Executable ফাইল দ্বারা যদি পদ্ধতি বানানো হয় তবে এটি কম্পিউটার এর সিস্টেমকে আক্রমন বা তার ফাইল গুলোকে সংক্রামিত করবে যকে আমরা ভাইরাস বলে থাকি তার চেয়ে বরং ওয়ার্ম ই বেশি মারাত্বক।

আমার এই টিউনটি হয়ত করা হত না। আবার হয়ত বেশ কিছুদিন এর জন্য হারিয়ে যেতাম। পূর্ববতী টিউনে যারা আমাকে আমার টিউন করার জন্য আগ্রহ যুগিয়েছেন তাদের অবদানেই এই টিউনটি করা হল। আপনাদের সকলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

আবার ও বলছি, আমার জ্ঞান সীমিত, আমার এই টিউন এ অনেক কিছু বাদ থেকে যেতে পারে। কিন্তু আপনারা যদি সেই ভুল গুলো ধরে দিয়ে এবং এর সম্মন্ধে আরো বিস্তারিত ভাবে লিখে টিউন করেন তবে আমর মনে হয় সবার উপকৃত হবে। আর আমার ভুল গুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য আপনাদের কাছে আবেদন করছি।
সকলকে ধন্যবাদ।

Level 2

আমি স্টারটেক স্টারটেক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 20 টি টিউন ও 164 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

জানতে আগ্রহী, জানাতে আগ্রহী। হাত বাড়াই সাহায্য দেবার ও নেবার জন্য। সাধ্য খুবই কম দেবার মত। জ্ঞান আহোরনে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করি চাই বন্ধু হতে সবার...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

খুবেই কাজের জিনিস শেয়ার করলেন, বিষয়গুলি এমন ভাবে জানা ছিল না। আশা করি আমাদেরকে ছেড়ে ্যাবেন না। ধন্যবাদ আপনাকে।

ভালো লাগল । ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন আশা করি।
তথ্যসূত্র থাকলে জানাবেন।
ধন্যবাদ।

    ভাইয়া আপনাকে ধন্যবাদ। তথ্য সূত্র বলতে আমাদের একটি বিষাল জ্ঞান কোষ রয়েছে। শুধু ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার না আপনি সকল কিছু এটি থেকে জানতে পাবেন। আর এটি হল উইকিপিডিয়া। একটু ঢু মেরে আসুন, আশাকরি ভাল লাগবে।

খুব সুন্দর লিখেছেন।
অনেক ধন্যবাদ।

    @ হাসান যোবায়ের (আল-ফাতাহ্)
    আপনার মন্তব্যে জন্য ধন্যবাদ।

আমার কমেন্ট কই গেল?

জেনে নিলাম অনেক কিছু।

অনেক ভাল টিউন,
অনেক কিছু জানা গেল।
ধন্যবাদ সুন্দর টিউনটি করার জন্য।